ইটানগর, ১৮ জুলাই : অরুণাচল প্রদেশ সরকার শুক্রবার ১৮ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে একগুচ্ছ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তাতে, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, শিশু সুরক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, সরকারি আবাসন বরাদ্দে স্বচ্ছতা এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একাধিক উদ্যোগ অনুমোদিত হয়েছে।
পাপুম পারে জেলার তোরু-তে সরকারী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের জন্য ৩৪টি শিক্ষক ও অশিক্ষক পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে কারিগরি শিক্ষার পরিকাঠামো মজবুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা জোরদার করতে ষষ্ঠ ইন্ডিয়ান রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে দুটি স্টেট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও পাঁচটি আইআর ব্যাটালিয়ান রয়েছে। নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের ফলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর নির্ভরতা কমবে এবং স্থানীয় যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
পক্সো আইন, ২০১২-এর ধারা ৩৯ অনুযায়ী ‘সাপোর্ট পার্সন’ নিয়োগের মডেল গাইডলাইন রাজ্য ভিত্তিক পরিবর্তনের মাধ্যমে গৃহীত হয়েছে। প্রতি ১০টি মামলায় একজন সাপোর্ট পার্সন নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যারা প্রি-ট্রায়াল ও ট্রায়াল পর্বে শিশু নির্যাতনের শিকারদের পাশে থেকে সহায়তা করবেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাজ্য রাজধানী ও জেলার সরকারি সাধারণ আবাসনের বরাদ্দ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে নতুন গাইডলাইন অনুমোদিত হয়েছে। এর ফলে অবৈধ দখল, অপব্যবহার এবং অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে। প্রসিকিউশন ডিরেক্টরেট-এ তিনজন উপ-পরিচালক, দশজন সহকারী পরিচালক এবং আঠারো জন কেরানি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটরদের পুনঃনামকরণ করে ডেপুটি ডিরেক্টর করা হবে। পাশাপাশি পাবলিক প্রসিকিউটর, অ্যাডিশনাল ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রসিকিউটরের বেতন কাঠামো সরকারী মানদণ্ড অনুযায়ী হালনাগাদ করা হয়েছে।
বন্দরদেওয়ায় পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে ফরেনসিক সায়েন্স ডিরেক্টরেট-এর ক্যাডার পুনর্গঠনের জন্য রিক্রুটমেন্ট রুল সংশোধন করা হয়েছে। সায়েন্টিস্ট-ই, ডি, সি এবং ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টদের পদে নাম ও বেতন কাঠামো পরিবর্তন করা হয়েছে।
এছাড়াও, বেসামরিক বিমান পরিবহন অধিদপ্তরে ১০টি নতুন পদ সৃষ্টির পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়ন দপ্তর থেকে পশুচিকিৎসা আধিকারিকদের পশুপালন ও দুগ্ধ উন্নয়ন দপ্তরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। মন্ত্রিসভার এই বিস্তৃত সিদ্ধান্তগুলি পরিষেবা উন্নয়ন, প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নাগরিক সুরক্ষার প্রতি সরকারের অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করছে।

