এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন : এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না, দাবি এএআইবি-র

নয়াদিল্লি, ১৭ জুলাই: এয়ার ইন্ডিয়ার ১২ জুনের বিমান দুর্ঘটনায় ২৬০ জন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী সংস্থা এয়ারক্রাফট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এই মুহূর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো খুব তাড়াতাড়ি হবে। সংস্থাটি আরও বলেছে, নির্বাচিত ও যাচাই না করা প্রতিবেদনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত টানা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং এটি তদন্ত প্রক্রিয়ার সততা নষ্ট করতে পারে।

এই বিবৃতি আসে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর একটি প্রতিবেদনের কয়েক ঘণ্টা পর। ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিমানের ক্যাপ্টেন সুমীত সভরওয়াল বিমানটি আকাশে উড্ডয়নের সময় উভয় ইঞ্জিনের জ্বালানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তবে, গত সপ্তাহে প্রকাশিত এএআইবির প্রাথমিক প্রতিবেদনে ককপিটের কথোপকথনের সারসংক্ষেপ থাকলেও, কে কোন কথা বলেছেন তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন পাইলট অপর পাইলটকে প্রশ্ন করেছিলেন কেন তিনি সুইচ ঘোরালেন, যেখানে অপর পক্ষ তা অস্বীকার করেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্ল্যাক বক্সের রেকর্ডিংয়ে ধরা পড়েছে ক্যাপ্টেন সভরওয়াল ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচগুলি বন্ধ করে দেন এবং তখন ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দর অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন কেন সেগুলি “কাট-অফ” অবস্থায় রাখা হয়েছে। সেই সময় ক্যাপ্টেন শান্ত থাকলেও ফার্স্ট অফিসার বেশ উত্তেজিত ও আতঙ্কিত ছিলেন বলে প্রতিবেদন জানিয়েছে। বৃহস্পতিবারের বিবৃতিতে এএআইবি তার “নির্ভুল রেকর্ড” তুলে ধরে জানিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় নিহত ২৪১ জন যাত্রী ও কর্মী এবং মাটিতে থাকা আরও ১৯ জনের মৃত্যুর মূল কারণ ও সুপারিশসহ চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে।

এএআইবি জানিয়েছে, আমাদের দৃষ্টিতে এসেছে কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বারবার বেছে বেছে এবং যাচাই না করে তথ্য তুলে ধরছে। তদন্ত চলাকালীন এমন কাজ একেবারেই দায়িত্বজ্ঞানহীন। তারা বলেছে, প্রাথমিক রিপোর্ট কেবল ঘটনা সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। “এই পর্যায়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টানা খুব তাড়াতাড়ি হবে। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি।

এএআইবি আরও বলেছে, নিহত যাত্রী, ক্রু এবং মাটিতে থাকা ব্যক্তিদের পরিবার এই দুর্ঘটনায় যে মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তা আমাদের সম্মান করা প্রয়োজন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা নিয়ে অহেতুক ভীতি বা বিতর্ক সৃষ্টি করা উচিত নয়।

সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে যে, চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। প্রয়োজনে জনস্বার্থ ও প্রযুক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আপডেটও প্রকাশ করা হবে, জানিয়েছে এএআইবি। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে সংস্থাটি ৯২টি দুর্ঘটনা এবং ১১১টি গুরুতর ঘটনা তদন্ত করেছে। বর্তমানে শুধু ভিটি-এএনবি বিমান দুর্ঘটনা নয়, আরও বেশ কয়েকটি গুরুতর ঘটনা তদন্তাধীন। শেষে সংস্থাটি জানায়, ভিটি-এএনবি-র এই দুর্ঘটনা সাম্প্রতিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক ঘটনা। এর তদন্ত খুবই পেশাদার ও কঠোরভাবে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে করা হচ্ছে।