এনএইচএআই এর উদ্যোগে ফারিদাবাদ-নোইডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করিডোরে বৃক্ষরোপণ অভিযান

নয়াদিল্লি, ৮ জুলাই : পরিবেশগত স্থিতিশীলতা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এনএইচএআই (ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া) একটি বৃহৎ বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে প্রায় ১৭,০০০ গাছ রোপণ করা হয়েছে ফারিদাবাদ-নোইডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করিডোরের পাশে। এটি বিশেষভাবে ‘এক পের মা কে নাম 2.0’ ক্যাম্পেইনের আওতায় পরিচালিত হয়। এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী শ্রী নীতিন গড়করি, রাজ্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী শ্রী অজয় তামটা, রাজ্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রী শ্রী হর্ষ মালহোত্রা, সংসদ সদস্য শ্রী মহেশ শর্মা (গৌতম বুদ্ধ নগর), বিধায়ক শ্রী ধীরেন্দ্র সিং (যেওয়ার), এনএইচএআই চেয়ারম্যান শ্রী সন্তোষ কুমার যাদব সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রক, এনএইচএআই, স্থানীয় প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। এই মূহুর্তে স্থানীয় স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাও বৃক্ষরোপণ করেন, যারা পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অংশগ্রহণ করে।

বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানটি গৌতম বুদ্ধ নগর জেলার যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে ইন্টারচেঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়, যা ফারিদাবাদ-নোইডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রোডের সংলগ্ন এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এই করিডোরটি দিল্লি-এনসিআর এবং যেওয়ারে অবস্থিত নোইডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির মধ্যে সংযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শ্রী নীতিন গড়করি, যিনি পরিবেশ সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়নকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “আজকাল সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের মাধ্যমে যে পরিমাণ দূষণ ঘটে, তা মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে। আমাদের জন্য এটি একটি গুরুতর সমস্যা এবং আমাদের এটি কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিকল্প জ্বালানি যেমন এথানল ব্যবহার এবং বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “এছাড়াও, আমরা রাস্তা নির্মাণে বর্জ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশকে সুরক্ষা প্রদান করছি এবং প্রায় ৮০ লাখ টন বর্জ্য রাস্তা নির্মাণে ব্যবহার করেছি।”

তিনি এও উল্লেখ করেন যে, “পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই ধরনের বৃক্ষরোপণ অভিযানগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরিবেশ সুরক্ষায় বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ, রাস্তার পাশে সৌন্দর্যবর্ধন, এবং আরও নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছি। ‘এক এক পের মা কে নাম ‘ একটি মহৎ উদ্যোগ, এবং এনএইচএআইকে অভিনন্দন জানাই, যারা এই উদ্যোগের মাধ্যমে জাতীয় মহাসড়কগুলিতে প্রায় ৫ কোটি গাছ রোপণ করেছে।”

ফারিদাবাদ-নোইডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করিডোরটি এলাকায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এটি শুধুমাত্র যোগাযোগের উন্নতি ঘটাবে না, বরং এ অঞ্চলের পরিবেশগত পরিস্থিতিও যথেষ্ট উন্নত করবে। প্রায় ১৭,০০০ গাছ রোপণ করায় এখানকার বায়ু গুণগত মান উন্নত হবে, মাটি ক্ষয় কমানো হবে, এবং জীববৈচিত্র্যও বৃদ্ধি পাবে। এই করিডোরটি এক নতুন ধরনের পরিবেশবান্ধব অবকাঠামোর উদাহরণ স্থাপন করবে, যেখানে পরিবেশগত সুরক্ষা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন একসাথে চলবে।

এনএইচএআই ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের জাতীয় মহাসড়কগুলোকে “গ্রিন করিডোর” হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য নানা কার্যক্রম শুরু করেছে। এ ধরনের প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে বিশেষত বাঁশ রোপণ, ঘন বৃক্ষরোপণ এবং ভার্টিকাল ল্যান্ডস্কেপিংয়ের মতো পদক্ষেপগুলো পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সহায়ক হচ্ছে।

এনএইচএআই তার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সম্প্রসারণে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জন করেছে। ২০২৪-২৫ সালের জন্য গাছ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ লাখ, কিন্তু এনএইচএআই ৬৭ লাখ গাছ রোপণ করেছে, যা একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। ‘এক পের মা কে নাম 2.0’ ক্যাম্পেইনের আওতায় এনএইচএআই ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১২ লাখ গাছ রোপণ করেছে।

এনএইচএআই দীর্ঘমেয়াদে একটি টেকসই জাতীয় মহাসড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ২০১৫ সালে গ্রিন হাইওয়ে (বৃক্ষরোপণ, স্থানান্তর, সৌন্দর্যবর্ধন এবং রক্ষণাবেক্ষণ) নীতির অধীনে এনএইচএআই প্রায় ৪.৭৮ কোটি গাছ রোপণ এবং ৭০,০০০ গাছ স্থানান্তর করেছে।

এই বৃক্ষরোপণ অভিযান শুধুমাত্র একটি সাম্প্রতিক পদক্ষেপ নয়, বরং এটি এনএইচএআই এর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। পরিবেশ সুরক্ষার পাশাপাশি, জাতীয় মহাসড়কগুলোর উন্নতি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ এবং রাস্তা নির্মাণে বর্জ্য ব্যবহারের মতো পদক্ষেপগুলি দেশের সব অঞ্চলের জন্য একটি টেকসই ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এনএইচএআই এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশগত স্থিতিশীলতা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কেবল এক্ষেত্রে নয়, দেশের অন্যান্য প্রান্তেও একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনার কাজ করছে।