নয়াদিল্লি, ২৮ জুন: নবীন ও নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রক সম্প্রতি জাতীয় জৈব শক্তি কর্মসূচির প্রথম ধাপের অধীনে বায়োমাস কর্মসূচির জন্য সংশোধিত নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকাগুলি ২০২ ১-২২ অর্থবর্ষ থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। এই সংশোধনীগুলির মূল লক্ষ্য হল পরিচ্ছন্ন শক্তি সমাধানের প্রচার, ব্যবসা করার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করা এবং সারা ভারতে বায়োমাস প্রযুক্তির ব্যবহার দ্রুত বৃদ্ধি করা।
নতুন কাঠামোর অধীনে, মন্ত্রক বেশ কয়েকটি প্রক্রিয়াকে সহজ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কাগজপত্র হ্রাস এবং অনুমোদন প্রক্রিয়াকে সরলীকরণ, যা বিশেষ করে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ -কে তাদের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করবে। এই পরিবর্তনগুলি ফসলের অবশিষ্টাংশ ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতের নেট-জিরো নির্গমনের বৃহত্তর লক্ষ্যের সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।
প্রযুক্তিগত সংহতকরণ এই সংশোধনীগুলির একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। এখন এসসিএডিএ-এর মতো ব্যয়বহুল ও উচ্চ-প্রযুক্তি ব্যবস্থার পরিবর্তে আইওটি-ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সমাধান বা ত্রৈমাসিক ডেটা জমা দেওয়ার বিকল্প থাকবে। এই সাশ্রয়ী পদক্ষেপটি ডিজিটাল পর্যবেক্ষণ এবং জবাবদিহিতা বাড়াবে, বিশেষ করে ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে।
নির্দেশিকাগুলিতে নথিপত্রের প্রয়োজনীয়তাও উল্লেখযোগ্যভাবে সরলীকরণ করা হয়েছে। ব্রিকুয়েট এবং পেলেট উৎপাদনকারী প্ল্যান্টের ডেভেলপারদের এখন অনুমোদন সংক্রান্ত একাধিক নথি জমা দিতে হবে না। এই পরিবর্তন সময় বাঁচাবে এবং ব্যবসা করা সহজ করবে।
পরিচালনাগত নমনীয়তা বাড়াতে, আগেকার দুই বছরের ব্রিকুয়েট বা পেলেট বিক্রয় চুক্তির প্রয়োজনীয়তা এখন একটি সাধারণ বিক্রয় চুক্তি দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছে। এই পরিবর্তন প্রকল্প ডেভেলপারদের দীর্ঘমেয়াদী চুক্তিতে আবদ্ধ না হয়ে বাজারের পরিস্থিতির প্রতি আরও গতিশীলভাবে সাড়া দিতে দেবে। সংশোধিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, বায়োমাস পণ্যের নমনীয় বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যার অর্থ ব্যবসা শুরু করার জন্য এখন দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির প্রয়োজন নেই।
এছাড়াও, কেন্দ্রীয় আর্থিক সহায়তা উপাদান এর অধীনে ভর্তুকি বিতরণের প্রক্রিয়াটি কর্মক্ষমতা-ভিত্তিক এবং স্বচ্ছ করা হয়েছে। ৮০% এর বেশি দক্ষতার সাথে চলমান প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ আর্থিক সহায়তা পাবে, যখন ৮০% এর কম দক্ষতার প্রকল্পগুলি আনুপাতিক হারে সহায়তা পাবে।
কর্মক্ষমতা পরিদর্শন সময়কাল সরলীকরণ করা হয়েছে। পূর্বে এটি কমিশনিংয়ের তারিখ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হতো, কিন্তু এখন এটি কমিশনিংয়ের তারিখ থেকে বা নীতিগত অনুমোদনের তারিখ থেকে ১৮ মাসের মধ্যে করা যাবে, যেটি পরে হবে। উপরন্তু, ডেভেলপারদের মাঠ পর্যায়ের পরিচালনগত চ্যালেঞ্জগুলি পূরণ করার জন্য, এমএনআরই সচিব সময়সীমা বাড়াতে পারবেন।
পরিদর্শন চলাকালীন, পূর্বে তিন দিনের একটানা গড় ১৬ ঘণ্টা প্রতিদিনের হারে নির্ধারিত ক্ষমতার ৮০ শতাংশে অপারেটিং প্ল্যান্টের ভিত্তিতে কর্মক্ষমতা রিপোর্ট তৈরি করা হতো। তবে, এখন এটি শুধুমাত্র ১০ ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়েছে। কারণ পরিদর্শন প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো দাবি করা এবং পরিচালন ক্ষমতার সত্যতা যাচাই করা এবং ১০ ঘণ্টা একটানা অপারেশন পর্যবেক্ষণ এই উদ্দেশ্যের জন্য যথেষ্ট হবে।
বায়ু দূষণ, বিশেষ করে উত্তর ভারতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর কারণে সৃষ্ট দূষণের জরুরি প্রয়োজন উপলব্ধি করে, নতুন নির্দেশিকাগুলিতে একটি নিয়ম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর অধীনে দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের এনসিআর জেলাগুলিতে বায়োমাস পেলেট উৎপাদকদের এমএনআরই বা সিপিসিবি থেকে সবচেয়ে বেশি উপকারী সহায়তা প্রকল্প বেছে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, এই সংশোধিত নির্দেশিকাগুলি বায়োমাস কর্মসূচির মসৃণ বাস্তবায়নে এবং চলমান প্ল্যান্টগুলিতে অনুমোদিত আর্থিক সহায়তার সময়মতো বিতরণে সহায়তা করবে। একই সাথে, এটি এই ক্ষেত্রকে আরও বায়োমাস-ভিত্তিক প্ল্যান্ট স্থাপনে উৎসাহিত করবে। এর ফলে অবশেষে ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে এবং কৃষি বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত হবে। এই আপডেট করা নির্দেশিকাগুলি ব্যবসাগুলির জন্য বায়োমাস প্রযুক্তি গ্রহণ করা সহজ করবে, দক্ষ অপারেশনের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দেবে এবং ভারতের পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে, পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং দূষণ হ্রাসের জন্য বাস্তবসম্মত, ব্যবসা-বান্ধব সমাধানগুলিকে প্রচার করবে।

