আগরতলা, ২৭ জুন : রাজ্যের বর্তমান আইন শৃঙ্খলাজনিত পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা। তাই রাজ্যবাসীর স্বার্থে পরিস্থিতির অবসানে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
এদিন তিনি চিঠিতে লেখেন, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যবাসী দলমতের উর্ধ্বে উঠে শান্তি-পূর্ণ ভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তৎকালীন সরকারের পরিবর্তন ঘটিয়ে আপনাদের দলের হাতে সরকার পরিচালনার দায়িত্বভার অর্পন করে। কিন্তু নূতন সরকার গঠনের অল্পকিছুদিন পরেই সরকারের প্রধান থেকে শুরু করে একটি অংশের মন্ত্রী বিধায়ক ও নেতা নেত্রীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে জনগনের গনতান্ত্রিক অধিকার সমূহ পদদলিত করা ও গনতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার কন্ঠরোধ করা শুরু হয়। বিরোধীদের রাজনৈতিক কার্যকলাপে বাধা দান, তাদের কার্যালয় দখল করার মতো ঘৃণ্যকাজ নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচিত বিধায়ক ও সুপ্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের উপর দৈহিক হামলার ঘটনাও ঘটে। সরকার প্রধানের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে পরিপুষ্ট বাইক-বাহিনীর বাড়ি ঘরে আক্রমন, অগ্নিসংযোগ ও হুমকি প্রদর্শণ এক ভয়াবহ আতংকের পরিবেশ সৃষ্টি করে সারা রাজ্যে। পুলিশ প্রশাসন হয়ে পড়ে অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র। ভেঙ্গে পড়ে আইনের শাসন। নূতন সরকারকে ঘিরে রাজ্যবাসী- যে স্বপ্ন দেখেছিল অঙ্কুরেই তা বিনষ্ট হয়ে যায়।
তাঁর কথায়, বিগত দিনে মুখ্যমন্ত্রীকে তার পদ থেকে অপসারন করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আপনার হাতে অর্পন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভার। এতে রাজ্য বাসীর মনে আবার আশার কিরণের সঞ্চার হয়। তাঁরা বিশ্বাস করতে শুরু করে এবার হয়তো রাজ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে, তৈরি হবে গণতান্ত্রিক বাতাবরণ। কিন্তু রাজ্য বিধান সভার কয়েকটি আসনের উপনির্বাচনে শাসকদল আশ্রিত সমাজদ্রোহীরা যে ভাবে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় তাতে রাজ্যবাসীর আবারও আশাভঙ্গ হল, আপনার মুখ্যমন্ত্রীত্বের সময়েও সেই সমাজদ্রোহীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠে। আপনার কথিত সুশাসন, অপরাধীদের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা শুধুমাত্র সরকারী প্রচার পত্র আর ভাষনে আটকা পড়ে গেল, বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিধায়ক ও সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের কমিটির কার্যকরী কমিটির স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য সুদীপ রায় বর্মনের সরকারী বাসভবনে শাসক দল আশ্রিত সমাজদ্রোহীদের আক্রমনের ঘটনা তার জলন্ত উদাহরণ। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতিতে প্রাক্তনের উস্কানি মূলক বক্তব্য অনুঘটকের কাজ করে চলেছে। তাঁর দাবি, রাজ্যের বর্তমান অবস্থা মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনে কলঙ্ক লেপনের ঘৃণ্য প্রয়াস হতে পারে। তাই রাজ্যবাসীর স্বার্থে কঠোর পুলিশী ব্যবস্থা গ্রহণ করে রাজ্যে এক সুস্থ ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বাতাবরণ প্রতিষ্ঠিত করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

