নয়াদিল্লি, ২৫ জুন — আজ ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ উপলক্ষে এক সোশ্যাল মিডিয়া বার্তায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থাকে কংগ্রেসের ক্ষমতালোলুপ মানসিকতার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “জরুরি অবস্থা দেশের কোনো জাতীয় প্রয়োজন ছিল না, বরং এটি ছিল এক ব্যক্তির এবং কংগ্রেসের কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের ফল।”
অমিত শাহ অভিযোগ করেন, জরুরি অবস্থার সময় সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ধ্বংস করা হয়েছিল, বিচার বিভাগের হাত বাঁধা হয়েছিল, এবং সমাজকর্মীদের জেলে পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, এই দিনটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যখন ক্ষমতা স্বৈরতন্ত্রে পরিণত হয়, তখন জনগণের মধ্যেই থাকে তাকে উৎখাত করার শক্তি।
তিনি আরও জানান, এই কালো অধ্যায়ে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাঁর কথায়, জরুরি অবস্থার সময় দেশবাসী প্রবল যন্ত্রণা ও দুঃখের মধ্যে দিন কাটিয়েছিল। নতুন প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস তুলে ধরার লক্ষ্যে কেন্দ্র সরকার এই দিনকে ‘সংবিধান হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজ দিল্লিতে অমিত শাহ ‘দ্য ইমার্জেন্সি ডিয়ারিজ – ইয়ার্স দ্যাট ফোর্জেদ আ লিডার’ নামে একটি বই প্রকাশ করবেন। এই বইটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জরুরি অবস্থার সময়কার সংগ্রামের কাহিনী তুলে ধরেছে। তখন তিনি একজন তরুণ আরএসএস প্রচারক ছিলেন। বইটিতে মোদীর গণতান্ত্রিক আদর্শ রক্ষার জন্য লড়াই ও তাঁর রাজনৈতিক চিন্তার বিকাশের দিকটি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সহকর্মীদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও বিভিন্ন আর্কাইভাল উপাদানের উপর ভিত্তি করে এই বই রচিত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান, এই বইটি তাঁর জরুরি অবস্থার সময়কার যাত্রাপথের কথা তুলে ধরে। তিনি বলেন, “আমি তখন একজন তরুণ প্রচারক ছিলাম। জরুরি অবস্থার বিরোধিতা করা আমার জন্য একটি শেখার অভিজ্ঞতা ছিল। এটি আমাকে গণতান্ত্রিক কাঠামো রক্ষার গুরুত্ব বুঝতে সাহায্য করেছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী অনুরোধ করেন, যারা সেই সময়ে কষ্ট পেয়েছেন বা যাঁদের পরিবার ভুক্তভোগী ছিলেন, তাঁরা যেন তাঁদের অভিজ্ঞতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নেন, যাতে যুব প্রজন্ম ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সালের সেই অন্ধকার যুগ সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
গতকাল ‘আপৎকাল কে ৫০ সা’ল’ স্মরণ অনুষ্ঠানে অমিত শাহ বলেন, “জরুরি অবস্থা দেশের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নয়, বরং ইন্দিরা গান্ধীর ক্ষমতা রক্ষা করার জন্য জারি করা হয়েছিল।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, লাখ লাখ মানুষ তাঁদের জীবন, কর্মজীবন এবং পরিবার বিসর্জন দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য লড়াই করেছেন। দেশের জনগণই প্রমাণ করেছে, স্বৈরতন্ত্রকে কখনও সহ্য করা হবে না।
তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী মোদী জরুরি অবস্থার উপর একটি বই রচনা করেছেন এবং আজই সেটি প্রকাশিত হবে। বইটিতে জরুরি অবস্থা চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি তুলে ধরা হয়েছে।
2025-06-25

