ওয়াশিংটন, ২৫ জুন : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার বলেন, সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি “কয়েক দশক পিছিয়ে গেছে” এবং দেশটির গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনাগুলো “সম্পূর্ণ ধ্বংস” হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ইরান “অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে” এবং এখন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার মতো কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার অবস্থায় নেই। হামলার একদিন পর, ট্রাম্প আরও বলেন, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে তাঁর মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি “খুব ভালোভাবে চলছে”। উল্লেখযোগ্যভাবে, তিনি এই মার্কিন হামলার তুলনা টানেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে ফেলা পারমাণবিক বোমার সাথে। যদিও তিনি সরাসরি সেই উদাহরণ দিতে চাননি, তবু তাঁর বক্তব্য, “সেটাও যুদ্ধ শেষ করেছিল, এ ঘটনাও অনেকটা একইরকম।”
এদিকে, ট্রাম্প বিরোধী প্রতিবেদনকে ‘ফেক নিউজ’ বলে উড়িয়ে দেন, যারা একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে, মার্কিন হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়েছে। ওই প্রতিবেদন, যা পেন্টাগনের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির একটি গোপন মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে তৈরি, জানায় যে ইরানের ইউরেনিয়াম মজুত এবং সেন্ট্রিফিউজগুলোর একটি অংশ অক্ষত রয়েছে এবং কিছু স্থাপনা কেবল সিল করে রাখা হয়েছে, ধ্বংস করা হয়নি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এই প্রতিবেদনকে “পুরোপুরি ভুল” বলে উড়িয়ে দেন এবং বলেন, এটি “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অপমান করার স্পষ্ট প্রচেষ্টা।” তাঁর মতে, ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের ১৪টি বোমা নির্ভুলভাবে পড়লে “সম্পূর্ণ ধ্বংস” ঘটে, এবং এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
ট্রাম্প দাবি করেন, গাজা উপত্যকায়ও “বড় অগ্রগতি” হয়েছে এবং এই হামলা পশ্চিম এশিয়ার শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, “আমরা সত্যকে প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি রাস্তায়, প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিয়েছি।” তাঁর মতে, ইরানের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ শুধুই একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং একটি বার্তা — গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার পক্ষে এবং কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে।
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনের বছরে এই অভিযানের সফলতা তুলে ধরে ট্রাম্প তাঁর নেতৃত্ব ও কূটনৈতিক দক্ষতা জোরদার করতে চাইছেন। তবে ইরানের প্রকৃত পারমাণবিক সক্ষমতা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্ক অব্যাহত।

