নববধূ ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে স্বামীর হত্যার চক্রান্তের অভিযোগ, প্রেমিক পলাতক

কর্ণূল(অন্ধ্র প্রদেশ), ২৩ জুন : অন্ধ্র প্রদেশের কর্ণূল জেলায় এক ৩২ বছর বয়সী ভূমি জরিপকারীকে হত্যার অভিযোগে নববিবাহিত স্ত্রী ও তার মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে কর্ণূলের এক ব্যাঙ্ককর্মীও জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তিনি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত তেজেশ্বর তেলেঙ্গানার জোগুলাম্বা গদ্বাল জেলার বাসিন্দা। গত ১৮ মে ঐশ্বর্য-র সাথে বিয়ের এক মাসের মধ্যে গত ১৭ জুন তিনি নিখোঁজ হন। ওই দিনই কর্ণূল শহর থেকে প্রায় ৩০-৪০ কিমি দূরে পন্যম মণ্ডলের সুগালিমেট্টু এলাকায় তাঁর গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে, তেজেশ্বরকে এক জমির জরিপ করার প্রলোভনে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। চলন্ত গাড়ির মধ্যেই তাঁকে খুন করা হয় এবং পরে দেহটি রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

এই মামলার মোড় ঘুরে যায় আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসায়। নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, ঐশ্বর্য এবং তাঁর মা সুজাতা—উভয়েই কর্ণূলের ওই ব্যাঙ্ককর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত ছিলেন। অভিযোগ, ওই ব্যাঙ্ককর্মীই খুনিদের ভাড়া করে তেজেশ্বরকে হত্যা করেছে এবং খুনের সময় নিজের চালককেও সঙ্গে পাঠিয়েছে।

বিয়ের আগে থেকেই ঐশ্বর্যের সঙ্গে ব্যাঙ্ককর্মীর সম্পর্ক ছিল। বাগদানের কিছুদিন আগে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান ঐশ্বর্য। পরে ফিরে এসে জানান পণ ও মানসিক চাপের কারণে বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলেন। পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও বিয়েটি হয়। তেজেশ্বরের পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকেই তাঁর স্ত্রী বারবার ফোনে কথা বলতেন ও মানসিকভাবে স্বামীর থেকে আলাদা ছিলেন। কল রেকর্ডে দেখা গেছে, বিয়ের পরও ঐশ্বর্য ও ব্যাঙ্ককর্মীর মধ্যে ২,০০০-রও বেশি ফোন হয়েছে।

তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, সম্পত্তি এবং ঐশ্বর্যের সম্পর্ক নিয়ে দ্বন্দ্বই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ। ভাড়াটে খুনিদের মাধ্যমে তেজেশ্বরকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একদল খুনি ১০ একর জমির জরিপের ছুতোয় তেজেশ্বরকে ডেকে নিয়ে যান এবং গাড়ির মধ্যেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, জেরা চলাকালীন ঐশ্বর্য ও তাঁর মা সুজাতা হত্যার চক্রান্তে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পলাতক ব্যাঙ্ককর্মী এবং অন্যান্য জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার সম্পূর্ণ চিত্র উদঘাটনের জন্য তদন্ত জোরকদমে চলছে।