নয়াদিল্লি, ২১ জুন: সম্প্রতি আহমেদাবাদ প্লেন দুর্ঘটনার পর এয়ার ইন্ডিয়ার পরিষেবা নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় ৭৯ শতাংশ যাত্রী এয়ার ইন্ডিয়ার পরিষেবার মান এবং বিমান রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। গত বছরের ৫৫ শতাংশের তুলনায় এ বছরের এই অসন্তুষ্টির পরিমাণ বড়সড় বৃদ্ধি বলেই মনে করা হচ্ছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণ নয়, গ্রাহক পরিষেবা, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং এবং ইন-ফ্লাইট এন্টারটেইনমেন্ট সিস্টেমের অভাব নিয়েও যাত্রীরা অসন্তুষ্ট। টাটা গোষ্ঠী অধিগ্রহণের পর যাত্রীদের প্রত্যাশা বেড়ে গেলেও, পরিষেবার মানে সেই অনুযায়ী উন্নতি দেখা যায়নি বলেই অভিযোগ।
আহমেদাবাদ দুর্ঘটনার পর যাত্রীদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এয়ারলাইনের বিরুদ্ধে যাত্রীরা সরব হয়েছেন। পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে ডিরেক্টোরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
ডিজিসিএ সম্প্রতি দুটি গুরুতর নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য এয়ার ইন্ডিয়াকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ১৫ ও ১৭ মে বেঙ্গালুরু থেকে লন্ডনগামী দুটি ফ্লাইট ১০ ঘণ্টার নির্ধারিত সময়সীমার বেশি উড়ে গেছে। এই নিয়ম এপ্রিল ২০১৯ সাল থেকে কার্যকর হয়েছে। ডিজিসিএ এয়ার ইন্ডিয়ার কাছে এই লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং ভবিষ্যতে নিয়ম কঠোরভাবে মানার নির্দেশ দিয়েছে।
আরেকটি তদন্তে, ফ্লাইট ক্রুর বিশ্রাম ও লাইসেন্স সংক্রান্ত নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে রেস্ট পিরিয়ড কম থাকা সত্ত্বেও ক্রুদের ফ্লাইটে মোতায়েন করা হয়েছে। এই গাফিলতির জন্য ডিজিসিএ দায়ী কর্মকর্তাদের অপারেশনাল দায়িত্ব থেকে সরিয়ে, তাদের নন-অপারেশনাল দায়িত্বে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে।
ডিজিসিএ এয়ার ইন্ডিয়ার ক্রু শিডিউলিং, কমপ্লায়েন্স মনিটরিং ও অভ্যন্তরীণ দায়বদ্ধতার অভাব নিয়ে তীব্র অসন্তোষ জানিয়েছে। সংস্থা বলেছে, এ ধরনের সিস্টেমেটিক ব্যর্থতা শুধুমাত্র নিয়ম লঙ্ঘন নয়, যাত্রী নিরাপত্তার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
যদিও সামগ্রিকভাবে এয়ার ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে অসন্তোষ বেড়েছে, তবুও কয়েকটি ক্ষেত্রে উন্নতির ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যেমন, সময় মেনে বিমান চলাচল নিয়ে ৪৮ শতাংশ যাত্রী অসন্তুষ্ট, যেখানে ২০২৪ সালে এই হার ছিল ৬৯ শতাংশ। এছাড়া, কর্মীদের আচরণ নিয়ে অভিযোগও কমেছে – ২০২৪ সালে যেখানে ৩৮ শতাংশ যাত্রী স্টাফদের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, ২০২৫ সালে তা নেমে এসেছে ৩১ শতাংশে।

