বালুচিস্তান, ১৮ জুন : পাকিস্তানের কোয়েটা থেকে পেশাওয়ারের পথে থাকা জাফর এক্সপ্রেস ট্রেনের ছয়টি কোচ বুধবার একটি বিস্ফোরণের পর লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে। সিন্ধ প্রদেশের জ্যাকোবাবাদের কাছে রেললাইনের উপর বিস্ফোরণের ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম থেকে এই খবর সামনে এসেছে।
জানা গেছে, বিস্ফোরণের তীব্রতায় রেললাইনে প্রায় তিন ফুট চওড়া ও গভীর গর্ত তৈরি হয় এবং ছয় ফুটের মতো রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাথমিকভাবে অনুমান, রেললাইনের ধারেই পুঁতে রাখা একটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) থেকেই এই বিস্ফোরণ হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তা বাহিনী, এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে বালুচ রিপাবলিকান গার্ডস নামে একটি সশস্ত্র বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। দ্য বালুচিস্তান পোস্ট-এর প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সংগঠনটির মুখপাত্র দোস্তিন বালুচ জানিয়েছেন জ্যাকোবাবাদ পশু হাট সংলগ্ন এলাকায় রিমোট কন্ট্রোল বিস্ফোরকের মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়েছে।
মুখপাত্রের বিবৃতি অনুযায়ী, “আজকের হামলায় জাফর এক্সপ্রেসের ছয়টি কোচ লাইনচ্যুত হয়েছে। পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী এই ট্রেনকে সেনা চলাচলের জন্য ব্যবহার করে, এবং ভবিষ্যতে আমাদের হামলা আরও জোরালো হবে।” তিনি আরও জানান, “আমাদের এই হামলা অব্যাহত থাকবে যতদিন না বালুচিস্তান স্বাধীন হয়।”
ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীরা, যাদের মধ্যে বহু শিশু ও পরিবার ছিল, নিরাপদে ট্রেন থেকে নেমে আসেন এবং তাদের মালপত্র উদ্ধার করেন। সৌভাগ্যবশত, এই হামলায় কেউ গুরুতর আহত বা নিহত হননি।
উল্লেখযোগ্যভাবে, জাফর এক্সপ্রেস আগেও বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলার শিকার হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি কোয়েটার কাছে এই ট্রেন হাইজ্যাক করে। তখন শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করে এবং দুই ডজনের বেশি নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করা হয়। পরে সেনা অভিযানের মাধ্যমে ৩৪৬ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয় এবং প্রায় ৫০ জন জঙ্গিকে খতম করা হয় বলে জানিয়েছিল পাক সেনাবাহিনী।

