নয়াদিল্লি, ১৮ জুন : ২০২৩ সালের বর্ষাকালে হিমাচল প্রদেশে ভয়াবহ বন্যা, ভূমিধস ও মেঘভাঙার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন পরিকল্পনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২০০৬.৪০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য মঞ্জুর করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সহযোগিতা মন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে গঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি এই অনুদানের অনুমোদন দেয়। কমিটির অন্যান্য সদস্য ছিলেন অর্থমন্ত্রী, কৃষিমন্ত্রী ও নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ।
এই আর্থিক সাহায্যের মধ্যে ১৫০৪.৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল-এর রিকভারি অ্যান্ড রিকনস্ট্রাকশন ফান্ডিং উইন্ডোর আওতায়। এর আগে, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩-এ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হিমাচল প্রদেশের জন্য ৬৩৩.৭৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত সাহায্য মঞ্জুর করেছিল।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রাজ্য সরকারগুলির পাশে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কেন্দ্র। দুর্যোগ-সহনশীল ভারত গড়ার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নেতৃত্বে দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার একাধিক কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ঝুঁকি হ্রাস এবং সম্পদের ক্ষয়রোধে সমন্বিত উদ্যোগ।
উল্লেখযোগ্যভাবে, কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩ সালের জোশীমঠ ধসের পর উত্তরাখণ্ডের জন্য ১৬৫৮.১৭ কোটি টাকা এবং গ্লেশিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড-এর পরে সিকিমের জন্য ৫৫৫.২৭ কোটি টাকা পুনরুদ্ধার প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এছাড়া, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে কেন্দ্রীয় সরকার ৭২৫৩.৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন দুর্যোগ প্রশমন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে শহরাঞ্চলের বন্যা প্রতিরোধে ৩০৭৫.৬৫ কোটি টাকা , ভূমিধস প্রতিরোধে ১০০০ কোটি টাকা , গ্লোফ রোধে ১৫০ কোটি টাকা , বন আগুন দমন প্রকল্পে ৮১৮.৯২ কোটি টাকা, বজ্রপাত প্রতিরোধে ১৮৬.৭৮ কোটি টাকা এবং খরা মোকাবিলায় ২০২২.১৬ কোটি টাকা।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার ২৮টি রাজ্যকে রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে ২০,২৬৪.৪০ কোটি টাকা এবং ১৯টি রাজ্যকে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে ৫১৬০.৭৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। পাশাপাশি, ১৯টি রাজ্যকে ৪৯৮৪.২৫ কোটি টাকা রাজ্য দুর্যোগ প্রশমন তহবিল এবং ৮টি রাজ্যকে ৭১৯.৭২ কোটি টাকা জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন তহবিল থেকেও সাহায্য প্রদান করা হয়েছে। এই সব পদক্ষেপ দেশের দুর্যোগ মোকাবিলা ও ঝুঁকি প্রশমনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি ও সক্রিয় ভূমিকারই প্রতিফলন।
এই পদক্ষেপগুলি প্রমাণ করে যে, দুর্যোগ মোকাবিলায় একটি সুসংবদ্ধ ও দৃঢ় কৌশল গ্রহণ করে দেশকে আরও প্রস্তুত ও সহনশীল করে তুলতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত সরকার।

