পাটনা, ১৭ জুন: বিহার পুলিশের পক্ষ থেকে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে ১০০টি ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মূলত বেআইনি উপায়ে অর্জিত সম্পত্তি সংক্রান্ত মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিহারের পুলিশ মহাপরিদর্শক বিনয় কুমার।
সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, রাজ্য পুলিশ সদর দপ্তর সরকারের কাছে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে। প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে বিচারাধীন মামলাগুলির নিষ্পত্তি অগ্রাধিকারভিত্তিতে করা যাবে।
ডিজিপি কুমার জানান, ২০০৫ সালে নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় বিহার জুড়ে ১৭৮টি ফাস্ট-ট্র্যাক আদালত সক্রিয় ছিল, যার ফলে অপরাধমূলক মামলার দ্রুত বিচার সম্ভব হয়েছিল এবং দোষীদের দণ্ড দেওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছিল। তবে ২০১১ সালের পর সেগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মামলাগুলি জমে যেতে থাকে। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন আদালতে প্রায় ১৭ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
পুলিশ প্রধান জানান, রাজ্যের ১,২৪৯টি থানার আওতায় থাকা ১,১৭২ জন অপরাধীর বেআইনিভাবে অর্জিত সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে সম্পত্তি সংযুক্তির জন্য প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে ২৩৯ জনের বিরুদ্ধে এসডিপিও-রা প্রস্তাব জমা দিয়েছেন, আর ২১২টি প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে বিচারাধীন রয়েছে।
১৮৮টি প্রস্তাব ইতিমধ্যে আদালতে জমা পড়েছে, যার মধ্যে ৪টি মামলায় আদালত আদেশ দিয়েছে। এরমধ্যে মুজাফ্ফরপুরের ২ জন অপরাধীর বিরুদ্ধে আদালত নির্দেশ জারি করেছে।
ডিজিপি কুমার বলেন, আদালতে জমা দেওয়া প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের নোটিশ পাঠানো হবে এবং ১৪ দিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না এলে আদালত একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
তদন্ত কর্মকর্তাদের তাদের ঊর্ধ্বতনদের কাছে সম্পত্তি সংযুক্তির প্রস্তাব পাঠাতে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অপরাধের ধরন এবং অর্জিত সম্পত্তির মূল্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
পুলিশ প্রধান বলেন, “সম্পত্তি সংযুক্তির পদক্ষেপ অপরাধীদের মনোবল ভাঙার অন্যতম কার্যকর উপায়।” তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাজ্যে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

