নয়াদিল্লি, ১৪ জুন : এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭ বিমানে ডিজিসিএ’র বাড়তি নজরদারির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আজ শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিন্জারাপু।
আহমেদাবাদে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড়ানের কয়েক মিনিটের মধ্যেই ভয়াবহভাবে ভেঙে পড়া এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট এআই-১৭১ দুর্ঘটনার পর, বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের বিমানের উপর বাড়তি নজরদারির নির্দেশ দিয়েছে ডিজিসিএ। এই দুর্ঘটনায় বিমানের ২৪২ জন আরোহীর মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে, এছাড়াও মাটিতে থাকা আরও অন্তত ২৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। একজন মাত্র আরোহী অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।
এদিন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জানান, “আমাদের দেশে নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতিমালা অত্যন্ত কঠোর। এই দুর্ঘটনার পর বোয়িং ৭৮৭ সিরিজের বিমানের উপর বাড়তি নজরদারি চালানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।” তাঁর দাবি, ডিজিসিএ ইতিমধ্যেই দেশের বিমান পরিবহন সংস্থাগুলির মালিকানাধীন ৩৪টি বোয়িং ৭৮৭ বিমানের মধ্যে ৮টি বিমানের পরিদর্শন সম্পন্ন করেছে এবং বাকিগুলির ক্ষেত্রেও অবিলম্বে পরিদর্শনের কাজ শুরু হয়েছে। মন্ত্রী জানান, মৃতদের শনাক্ত করতে ডিএনএ পরীক্ষা চলছে এবং পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পরিবারদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। গুজরাট সরকার এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করছে।
বিমান দুর্ঘটনার কারণ জানতে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধারের উপর জোর দিয়েছেন মন্ত্রী নাইডু। তিনি বলেন, “বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো(AAIB)-এর একটি দল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করেছে। এটি বিশ্লেষণ করলেই স্পষ্ট হবে, দুর্ঘটনার সময় ঠিক কী ঘটেছিল।”
ঘটনার গভীর তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে, যার নেতৃত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব। কমিটিতে থাকবেন বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব, গুজরাট সরকারের প্রতিনিধি, রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ, আহমেদাবাদ পুলিশ কমিশনার, ভারতীয় বায়ুসেনার ইনস্পেকশন ও সেফটি বিভাগের ডিজি, ডিজিসিএ ও বিসিএএস-এর মহাপরিচালক, গোয়েন্দা ব্যুরোর স্পেশাল ডিরেক্টর এবং ফরেনসিক সায়েন্স সার্ভিসেস ডিরেক্টর। মন্ত্রী জানান, “কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ, যারা এই দুর্ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে একটি সুসংগঠিত ও সমন্বিত রিপোর্ট পেশ করবেন। তদন্তের জন্য তিন মাস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।”
বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, “আমি পরিবারগুলোর যন্ত্রণাকে কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পারি। এটি নিঃসন্দেহে এক ভয়াবহ এবং মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্য ও তদন্ত নিশ্চিত করা হবে।”

