সমস্ত পথ এখন আলর্ণাথের দিকে, কারণ জগন্নাথ ও তাঁর ভ্রাতৃগণ এখন ‘আনাসরা’ পর্যায়ে

ভুবনেশ্বর, ১২ জুন: আজ থেকে শুরু হয়েছে ভগবান আলর্ণাথের ‘আনাসরা দর্শন’। আগামী ১৫ দিন ধরে ভক্তরা পুরী জেলার ব্রহ্মগিরির নিকটবর্তী ঐতিহাসিক আলর্ণাথ মন্দিরে চারভুজ নারায়ণ রূপে দেবতাকে দর্শন করতে পারবেন।

সূত্র মতে, দেবস্নান পূর্ণিমায় মহা স্নান উৎসবের পর জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা অনাসরা গৃহে প্রবেশ করেছেন। এই সময়ে, তাঁদের জনসাধারণের সামনে আনা হয় না এবং বিশ্বাস করা হয় যে আলর্ণাথদেবের পূজা করা জগন্নাথদেবের পূজার সমতুল্য। ফলে এই সময়ে আলর্ণাথ মন্দির পরিণত হয়েছে এক বৃহৎ তীর্থক্ষেত্রে।

ভক্তরা এখানে আসেন শুধু দর্শনের জন্য নয়, বিখ্যাত মন্দির প্রসাদ ‘খিরি’ উপভোগ করতেও। এই খিরি বিশেষ রকমের চাল ও দুধের পায়েস, যা আলর্ণাথ মন্দিরের এক অনন্য ঐতিহ্য।

ঐতিহাসিক মতে, মন্দিরটির প্রাচীন নির্মাণ ৯ম শতকে রাজা বনুদেব চতুর্থের শাসনকালে হয়েছে। তবে মন্দিরটি মূল খ্যাতি অর্জন করে ১২শ শতকে, যখন শ্রী রামানুজাচার্য মন্দিরটির সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন।

আরও জানা গেছে, আলর্ণাথ নামটি এসেছে রাজস্থানের আলওয়ার রাজবংশের শাসকদের থেকে, যাঁরা এই মন্দির স্থাপন করেন। পরে ১৫১০ খ্রিস্টাব্দে শ্রী চৈতন্য দেবের আগমন মন্দিরের মাহাত্ম্য আরও বৃদ্ধি করে। শ্রী চৈতন্য এখানে ভগবান জগন্নাথের এক জীবন্ত রূপ অনুভব করেন এবং দীর্ঘ সময় ধরে উপাসনা করেন।

উল্লেখযোগ্য যে, অনাসরা কালীন সময়ে জগন্নাথ মন্দিরে পট্টচিত্রের মাধ্যমে ‘অনাসরা পট্টি’ বা ‘অনাবসরা পট্টি’র রূপে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রার পূজা হয়। এমনকি সিংহদ্বারের ডানদিকে অবস্থিত পতিতপাবন মূর্তির দর্শনও এই সময় বন্ধ থাকে।

এই অনাসরা পর্যায়ে ভক্তদের জন্য আলর্ণাথদেবের দর্শনই হয়ে ওঠে প্রধান ভরসা এবং বিশ্বাস অনুযায়ী, এই সময়ে তাঁর দর্শন বিশেষ কল্যাণময় বলে বিবেচিত।