৬০ বছর পর সংবর্ধনা: দুবাইয়ে ৯০ বছর বয়সী ভারতীয় শিক্ষকের পাসপোর্টে বিশেষ স্ট্যাম্প

দুবাই, ১১ জুন: এক অবিস্মরণীয় সম্মান পেলেন ৯০ বছর বয়সী ভারতীয় শিক্ষক হাজী এন জামালউদ্দিন, যিনি ১৯৬৫ সালে মুম্বই থেকে জাহাজে করে দুবাই পৌঁছেছিলেন। দীর্ঘ ৬০ বছর পর, দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁর পাসপোর্টে প্রথমবারের মতো একটি প্রতীকী ইমিগ্রেশন স্ট্যাম্প বসানো হয়—যেটি তাঁর অবদান ও উত্তরাধিকারের প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহির পক্ষ থেকে এক হৃদয়গ্রাহী স্বীকৃতি।
হাজী এন জামালউদ্দিন দুবাই পৌঁছেছিলেন ২৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫-তে—যখন শহরটির কোনও স্থায়ী বন্দর ছিল না এবং প্রথাগত ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাও চালু হয়নি। ফলে তাঁর পাসপোর্টে কোনও প্রবেশ স্ট্যাম্প পড়েনি। সেই অনুপস্থিত ইতিহাসকে পূরণ করতেই দুবাই বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ তাঁকে সম্মানিত করে এই প্রতীকী স্ট্যাম্প প্রদান করেন।
ডাবাই এয়ারপোর্টস সামাজিক মাধ্যমে লেখে: “তাঁর আগমন ছিল এক সেবা, নম্রতা ও আশার উত্তরাধিকার। এখন ৯০ বছর বয়সেও হাজী জামালউদ্দিন বিশ্বাস করেন—‘শিক্ষাই আলোকিত করার শ্রেষ্ঠ অস্ত্র।’”
তিনি ১৯৮৪ সালে ‘ক্রিসেন্ট ইংলিশ হাই স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা আজও সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে অন্যতম সাশ্রয়ী বেসরকারি বিদ্যালয়।
হাজী জামালউদ্দিনের ছেলে রিয়াস জামালউদ্দিন এই দীর্ঘ ইতিহাসের স্বীকৃতির জন্য দুবাই এয়ারপোর্টসের সিইও-কে একটি ইমেইল লেখেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এই উদ্যোগে সাড়া দেয় এবং ১৯৬৫ সালের তারিখে প্রতীকী ‘এন্ট্রি স্ট্যাম্প’ ইস্যু করা হয়।
বর্তমানে ‘ক্রিসেন্ট ইংলিশ হাই স্কুল’-এ ১,৭০০ এর বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। হাজী জামালউদ্দিন বলেন, “আমি স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম ১৯৮৪ সালে। টাকা-পয়সা সব কিছু নয়। শিক্ষা হচ্ছে জীবনে এগিয়ে চলার প্রথম ধাপ।”
এই সম্মান শুধু একজন প্রবাসী শিক্ষকের প্রতি কৃতজ্ঞতা নয়, বরং তা এক প্রজন্মের আত্মত্যাগ, সেবা এবং আলোর পথে অগ্রযাত্রার প্রতীক। দুবাই শহরের আধুনিকতা ও বহুজাতিক সমাজব্যবস্থার পটভূমিতে হাজী এন জামালউদ্দিনের অবদান এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে থাকবে।