রাজ্যে অনুপ্রেবশকারী ইস্যুতে তিপরা মথা ফাঁদে পা দেবেন না, সতর্ক করল সিপিআই(এম)

আগরতলা, ১১ জুন : সম্প্রতি রাজ্যের কিছু এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছে তিপরা মথা। ইন্দিরা-মুজিব এবং আসাম চুক্তিকে অচল করে বিজেপি সরকার সিএএ আইন পাশ করেছে। কিন্তু অতীতে টিইউজেএস এবং তাঁদের জঙ্গি সংগঠন ত্রিপুর সেনার বিদেশী বিতারণ আন্দোলনের চরম দুঃখজনক পরিণতির অভিজ্ঞতা ত্রিপুরাবাসীর রয়েছে। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের পরিণতিও রাজ্যবাসীর অভিজ্ঞতায় রয়েছে। হাস্যকর ব্যাপার, সিএএ আইন প্রণয়নকারী বিজেপি’র সঙ্গে জোট করেছে মথা। সুতরাং, তাদের আন্দোলন স্ববিরোধী আন্দোলন। তাঁদের আন্দোলন জনগণের ঐক্য সম্প্রীতিকে দুর্বল করবে। তাই এই ধরনের আন্দোলন থেকে সকলের বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে সিপিআইএম।

আজ সিপিআইএমের তরফ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের পহেলগামে উগ্রপন্থীদের ঘৃণ্য আক্রমণের পর বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারগুলি কোন রকম যাচাই না করেই বাংলাভাষী মুসলিমদের জোর করে বাংলাদেশে পুশ ব্যাক বা ঠেলে পাঠাতে শুরু করেছে। এতে দেশের প্রকৃত নাগরিকও রেহাই পাচ্ছে না। বিজেপি সরকারের এ ধরনের অমানবিক ভূমিকাকে বিরোধীতা ও তীব্র সমালোচনা করেছে সিপিআই(এম)। তাছাড়া,
সম্প্রতি তিপরা মথা রাজ্যের কিছু এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের দাবিতে আন্দোলন করছে। অনুপ্রবেশের বিষয় রাজ্যে খুবই সংবেদনশীল। অতীতে টিইউজেএস এবং তাদের জঙ্গি সংগঠন ত্রিপুর সেনার বিদেশী বিতারণ আন্দোলনের চরম দুঃখজনক পরিণতির অভিজ্ঞতা ত্রিপুরাবাসীর রয়েছে। সিএএ বিরোধী আন্দোলনের পরিণতিও রাজ্যের মানুষের অভিজ্ঞতায় রয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব প্রদানের আইন হল সিএএ। অনুপ্রবেশ বন্ধ করার জন্য ১৯৭১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে ইন্দিরা-মুজিব আন্তর্জাতিক চুক্তি হয়। এই চুক্তিকে সঠিক ভাবে রূপায়ণের জন্য ১৯৮৫ সালে আসাম চুক্তি হয়। এই দুই চুক্তিকে অচল করে দিয়ে বিজেপি সরকার সিএএ আইন পাশ করে। তিপ্রা মথা যদি সত্যিকার বে-আইনী অনুপ্রবেশ বিরোধী হয়, তবে সি এ এ আইন প্রণয়নকারী বিজেপি’র সঙ্গে জোট করে কিভাবে, বলে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। সুতরাং, তাদের আন্দোলন স্ববিরোধী আন্দোলন। রাজ্যের জনগণের ঐক্য সম্প্রীতিকে দুর্বল করবে অথবা জনগণের মধ্যে ঐক্য বিরোধী বার্তা যাবে, এ ধরনের আন্দোলন থেকে সকলের বিরত থাকা উচিত।

সিপিআই(এম) বিবৃতিতে দাবি করেছে, আসলে তিপরা মথা উপজাতি জনগণের স্বার্থ রক্ষায় বিশেষ করে এডিসি এলাকার উন্নয়নে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে কার্যকরী করার জন্য যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছিল, এক বছরের বেশী সময় অতিক্রান্তের পরও চুক্তির কোন দাবিই কার্যকরী হয়নি।

সিপিআই(এম)র অভিযোগ, মূল সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কখনও রোমান হরফ, আবার কখনও পুষ্পবন্ত প্যালেস ও পরবর্তী সময়ে গোমতীর জেলা শাসকের সাথে সাক্ষাত ইত্যাদি বিষয়কে সামনে এনে আন্দোলনের নামে সরকারী অফিসে তালা দেওয়া, আবার নিজেরাই খুলে দেওয়া ইত্যাদি প্রহসনাত্মক আন্দোলনের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী এই ধরনের প্রচেষ্টার বিরোধী। তাই রাজ্যের জনগণের নিকট আবেদন রাখছে ভুল পথের শিকার না হয়ে জীবন জীবিকা, কাজ-খাদ্য, জননিরাপত্তা ও গণতন্ত্র রক্ষার সামিল হওয়ার আবদেন জানিয়েছে সিপিআই(এম)।

পাশাপাশি, অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে ফেরৎ পাঠাবার দাবি জানিয়েছে দল।