নয়াদিল্লি, ৩ জুন — অপারেশন সিঁদুর অধীনে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী দৃঢ় অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় বাড়াতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফররত একাধিক সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার দেশে ফিরে এসেছে। ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাংসদ বৈজয়ন্ত পাণ্ডার নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল আজ সকালে আলজেরিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত ও বাহরিন সফর শেষ করে দেশে ফেরে। তিনি সফরকে “সফল ও ফলপ্রসূ” বলে অভিহিত করেছেন।
মিডিয়ার সঙ্গে কথোপকথনে পাণ্ডা জানান, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নেতারা সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী পদক্ষেপে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন করেছেন এবং ভারতের উদ্বেগকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছেন। তার কথায়, “এই দেশগুলো জানে, আমাদের উদ্বেগ যুক্তিসম্মত, এবং তার জন্য আলাদা করে প্রমাণের প্রয়োজন নেই।” তিনি বলেন, সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ২২ এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের অবস্থান ও পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক মহলের সামনে তুলে ধরা।
ডিএমকে সাংসদ কানিমোঝি করুণানিধির নেতৃত্বাধীন অন্য একটি প্রতিনিধিদল রাশিয়া, লাটভিয়া, স্লোভেনিয়া, গ্রিস এবং স্পেন সফর শেষে শিগগিরই দেশে ফিরবেন।
জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর সাংসদ সঞ্জয় কুমারের নেতৃত্বাধীন আরও একটি প্রতিনিধিদল আজ সন্ধ্যায় দেশে ফিরবেন। তার আগে তিনি মালয়েশিয়ার বিদেশবিষয়ক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন এবং মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি সভার সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এই সফরগুলোর প্রতিটি পর্বে প্রতিনিধিদলগুলো সন্ত্রাসবাদের প্রতি ভারতের “জিরো টলারেন্স” নীতির স্পষ্ট বার্তা বহন করেছে।
কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল ব্রাজিল সফর শেষ করে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে রয়েছে। ব্রাসিলিয়ায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে শশী থারুর জানান, ওয়াশিংটনে তাঁদের একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সরকারি আধিকারিক, কংগ্রেস সদস্য, সিনেটর, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, মিডিয়া এবং নানা সংসদীয় কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় এবং কয়েকটি জনসভায় বক্তৃতা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
একই সময়ে পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলেরও ওয়াশিংটন সফর প্রসঙ্গে থারুর বলেন, “দুই দেশের একযোগে সফর এই পরিস্থিতিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।”
এছাড়া, এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের নেতৃত্বে একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল মিশরের কায়রোতে দেশটির বিদেশনীতি পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং আল হোরেইয়া গার্ডেনে মহাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অন্যদিকে, শিবসেনা সাংসদ শ্রীকান্ত শিন্ডের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল লাইবেরিয়া সফরে সে দেশের রাষ্ট্রপতি জোসেফ নিউমা বোকাই, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারা বেসোলো নিয়ান্তি এবং প্রতিনিধি সভার সভাপতি রিচার্ড নাগবে কুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
মিডিয়াকে দেওয়া এক বিবৃতিতে শিন্ডে বলেন, সফরকৃত দেশগুলো সকলেই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে এবং স্বীকার করেছে যে, সন্ত্রাস আজ এক আন্তর্জাতিক সংকট, যা কোনও একক দেশের সীমার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
এই বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক উদ্যোগ ভারতের শান্তিপূর্ণ অবস্থান ও সন্ত্রাসবিরোধী নীতিকে আন্তর্জাতিক পরিসরে আরও শক্তিশালী করেছে।

