নয়াদিল্লি, ২ জুন : সুপ্রিম কোর্ট সোমবার অসম সরকার পরিচালিত “অবাধ” আটক ও বিতাড়ন অভিযানের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদন শুনতে অস্বীকার করেছে। আবেদনটি করেছিল অল বিটিসি মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ জানিয়েছে, এই বিষয়ে আবেদনকারীদের গৌহাটি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া উচিত। আদালত স্পষ্ট ভাষায় বলেছে, “গৌহাটি হাই কোর্টে যান। এই আবেদন আমরা খারিজ করছি।”
আবেদনকারী সংগঠন, যা বোরোল্যান্ড অঞ্চলে সক্রিয় একটি সমাজ ও ছাত্র সংগঠন, তাদের আবেদনে অসম পুলিশের তথাকথিত ‘পুশ-ব্যাক’ নীতির বিরোধিতা করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিচারিক পর্যবেক্ষণ ছাড়াই এবং সংবিধান ও শীর্ষ আদালতের নির্ধারিত সুরক্ষা বিধান উপেক্ষা করে বহু মানুষকে “বিদেশি” সন্দেহে আটকের পর সীমান্ত এলাকা থেকে বিতাড়ন করা হচ্ছে।
আবেদনে বলা হয়েছে, ধুবরি, দক্ষিণ সালমারা ও গোলপাড়া-সহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে এই ‘পুশ ব্যাক’ প্রক্রিয়া চলছে, যার ফলে বহু ভারতীয় নাগরিক, বিশেষত দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষ, রাষ্ট্রহীন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই একতরফাভাবে ‘বিদেশি’ ঘোষিত হয়েছেন বা আইনি লড়াইয়ের সুযোগ পাননি।
অ্যাডভোকেট আদিল আহমেদের মাধ্যমে দাখিল করা আবেদনে দাবি করা হয়েছে, এই পদক্ষেপগুলি সংবিধানের ১৪, ২১ ও ২২ অনুচ্ছেদের অধীন প্রদত্ত মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। এটি সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায়, বিশেষ করে “নাগরিকত্ব আইন ১৯৫৫-এর ধারা ৬এ”-সংক্রান্ত মামলার রায়ের বিরুদ্ধেও। আবেদনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, বহু মানুষকে বিদেশি ট্রাইব্যুনালের রায় জানানো ছাড়াই বিদেশ মন্ত্রণালয়ের জাতীয়তা যাচাই ব্যতিত এবং আপিল বা পুনর্বিবেচনার অধিকার সম্পর্কেও না জানিয়ে বিতাড়িত করা হচ্ছে।
সংগঠনটি সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিল, বিচারিক ঘোষণা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যাচাই, এবং সব আইনি প্রতিকার না করে কাউকে বিতাড়ন করা অসাংবিধানিক মর্মে ঘোষণা করা হোক। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার রক্ষায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইনি সহায়তা কর্তৃপক্ষগুলিকে সক্রিয় করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, বিষয়টি উপযুক্ত ফোরাম হিসেবে গৌহাটি হাই কোর্টেই শুনানি হওয়া উচিত।

