আগরতলা, ৩১ মে: আজ ৩১শে মে, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। প্রতিবছরের মতো এবারও এই দিনটি তামাকজাত দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য তামাক ব্যবহারের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা এবং তামাক ত্যাগে উৎসাহিত করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ১৯৮৭ সালে এই দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছর ৩১ মে তারিখে দিবসটি পালন করা হয়। এদিনকে তামাক বিরোধী দিবস বলেও অভিহিত করা হয়। দেশব্যাপী সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন আলোচনা সভা, সচেতনতামূলক র্যালি, চিত্র প্রদর্শনী এবং গণমাধ্যম প্রচারণার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, তামাক সেবনের কারণে ফুসফুস ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ বহু জটিল রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্যে থাকা নিকোটিন অত্যন্ত আসক্তিকর এবং এটি মানবদেহে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি ডেকে আনে। ধূমপানের ফলে কার্বন মনোক্সাইড, টার, ও অন্যান্য বিষাক্ত গ্যাসের সংস্পর্শে এসে ফুসফুস, কোলন, লিভার ও মূত্রথলির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলিতে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়ে। পাশাপাশি এটি শ্বাসযন্ত্রের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং চোখ ও প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখন নিকোটেক্স গাম সরবরাহ করা হচ্ছে, যা তামাক ছাড়ার একটি কার্যকরী সহায়ক উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টেলিকনসালটেশন এর সুযোগ চালু রয়েছে, যার মাধ্যমে যে কেউ চিকিৎসকের কাছ থেকে তামাক ত্যাগ সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে পারেন।
সরকার এখন তামাকমুক্ত অফিস, তামাকমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং তামাকমুক্ত এলাকা ও গ্রাম গঠনের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলেছে। বিভিন্ন স্থানে প্রচারমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন করে তোলা হচ্ছে।
এই দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সবাই মিলে তামাকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সুস্থ, সবল, তামাকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

