কর্ণাটকের উপকূলবর্তী অঞ্চলে খুনের ঘটনা: অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার

মাঙ্গালুরু, ২৮ মে: কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলায় আব্দুল রহিম ওরফে ইমতিয়াজকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া পুলিশকে দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।

ঘটনার পর বান্টওয়াল রুরাল থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগকারী মোহাম্মদ নিসার জানান, আহতদের তিনি হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে এবং হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া কালন্দর শফির সাক্ষ্যে মামলা রুজু করা হয়।

এফআইআরে নাম উল্লেখ থাকা অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন দীপক ও সুমিথ, যাঁরা ভুক্তভোগীর পরিচিত বলে জানা গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, কুরিয়ালা গ্রামের ইরা কডি এলাকায় আব্দুল রহিম ও শফি একটি বাড়ির সামনে পিকআপ ভ্যান থেকে বালু নামাচ্ছিলেন। সে সময় দীপক, সুমিথ ও তাঁদের সহযোগীরা গাড়ি থেকে রহিমকে জোর করে নামিয়ে এনে ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে আক্রমণ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের চিৎকারে হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। হামলায় গুরুতর আহত রহিমকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তিনি বাঁচেননি। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ৩২ বছর বয়সী রহিম রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন এবং মানুষজন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন দক্ষিণ কন্নড় জেলার বান্টওয়াল, পুত্তুর, বেলথাংড়ি, সুলিয়া ও কদাবা তালুকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারার অধীনে ৩০ মে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে। মাঙ্গালুরু সিটি কমিশনারেট এলাকাতেও পৃথকভাবে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উদুপি ও চিকমাগালুরু জেলা থেকে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে যেমন সুরথকল, গুরূপুরা, কাইকাম্বা ও বাজপেতে টহল জোরদার করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে, সুরথকল এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে দুটি বেসরকারি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সম্প্রদায়ের নেতারা এই হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত বলে দাবি করেছেন এবং এটিকে ঘৃণাত্মক বক্তব্যের ফলাফল বলে উল্লেখ করেছেন। প্রশাসন জনগণকে শান্তি বজায় রাখতে ও তদন্তে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছে।

এই ঘটনার জেরে দক্ষিণ কন্নড় জেলায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, যার ফলে প্রশাসনের কাঁধে বাড়তি দায়িত্ব এসে পড়েছে।