নয়াদিল্লি, ২৬ মে: ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের যে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেখিয়েছেন, তা বাস্তবায়নে জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP) ২০২০ হবে অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি—এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান।
ব্রিটেনের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের উদ্দেশ্যে আয়োজিত “লেটার অফ ইনটেন্ট” (LOI) হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারতের ৩০ কোটিরও বেশি ছাত্রসমাজের মধ্যে প্রায় ৪ কোটির অবস্থান উচ্চশিক্ষায়। আমাদের লক্ষ্য আগামী পাঁচ বছরে গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিও (GER) ২৬–২৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে নিয়ে যাওয়া।”
প্রধান আরও বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কার এখন আর বিকল্প নয়—এটি অত্যাবশ্যক। বিশ্বমঞ্চে ভারতের অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে NEP ২০২০-কে সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে হবে। কেবল নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না—আমাদের বৈশ্বিকভাবে ভাবতে হবে এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।”
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০, যা ১৯৮৬ সালের পুরনো নীতির পরিবর্তে আনা হয়েছে, তা ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার একটি যুগান্তকারী রূপান্তর। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার কাঠামো নতুন করে গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই নীতির সূচনা। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো শিক্ষার্থীদের জন্য ভাষা শিক্ষায় নমনীয়তা—তাদের ওপর আর কোনো নির্দিষ্ট ভাষা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। বরং নিজস্ব সংস্কৃতি ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে যে ভাষা উপযুক্ত, তা শিখতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
এই শিক্ষানীতি গঠনের প্রক্রিয়ায় দেশের শিক্ষা পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন অংশীদারদের মতামত ও পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। ফলে এই নীতি যেমন অন্তর্ভুক্তিমূলক, তেমনই আধুনিক ও ভবিষ্যতমুখী।
ধর্মেন্দ্র প্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট, সরকার শিক্ষা খাতকে জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব, গুণগত শিক্ষা এবং সংস্কারের মাধ্যমে ভারতকে একটি জ্ঞানভিত্তিক, প্রতিযোগিতামূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে পরিণত করাই এখন মূল লক্ষ্য।

