রায়পুর, ২২ মে: ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চলের আবুজমাড় জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তীব্র গুলিযুদ্ধের পরে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসভারাজু নিহত হয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে পুলিশ। বুধবার সংঘটিত এই সংঘর্ষে ২৬ জনেরও বেশি মাওবাদী নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
ছত্তিশগড়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিজয় শর্মা বলেন, “গত ৭২ ঘণ্টা ধরে অভিযান চলছে। বুধবারের এনকাউন্টারে ২৬-এরও বেশি মাওবাদী নিহত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, এলাকা জুড়ে এখনো তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
৭১ বছর বয়সী বাসভারাজু ২০১৮ সালে নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৭০-এর দশক থেকে মাওবাদী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত এবং দেশের অন্যতম মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর মাথার দাম ছিল ₹১.৫ কোটি।
আন্দ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার জিয়ান্নাপেটা গ্রামের বাসিন্দা বাসভারাজু, ওয়ারাঙ্গলের রিজিওনাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে বি.টেক পাশ করেন। তাঁর ছদ্মনামগুলির মধ্যে রয়েছে গঙ্গান্না, প্রকাশ, কৃষ্ণা, বিজয়, দরপু নারসিমা রেড্ডি ও নারসিমা।
তদন্তে জানা গেছে, বাসভারাজুর নিজের গ্রামে কোনো সম্পত্তি নেই এবং তিনি ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে গ্রাম ছেড়েছিলেন। তাঁর মূল কার্যকলাপ ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত ছিল।
বাসভারাজু ১৯৮০ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে সিপিআই (এমএল) পিপলস ওয়ার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৭ সালে তিনি এবং অন্যান্য শীর্ষ মাওবাদী নেতা যেমন গণপতি ও কিষেনজী আবুজমাড়ের জঙ্গলে প্রাক্তন তামিল বিদ্রোহীদের কাছ থেকে অ্যামবুশ ও বিস্ফোরক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
১৯৯২ সালে তিনি সিপিআই (এমএল) পিপলস ওয়ারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে নির্বাচিত হন। পরে ২০০৪ সালে সিপিআইএমএলপিডব্লিউ ও এমসিসিআই -এর মিশ্রণে সিপিআই (মাওবাদী) গঠিত হলে, বাসভারাজুকে কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সচিব পদে নিযুক্ত করা হয়।
সূত্রের দাবি, গত অন্তত আট বছর ধরে বাসভারাজু আবুজমাড়ের জঙ্গলে গোপনে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। যদিও এখনো তাঁর মৃত্যুর আনুষ্ঠানিক নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি, তবে নিহতদের মধ্যে তাঁর উপস্থিতির জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

