ভারতের ব্লু রেভল্যুশনের পথিকৃৎ পদ্মশ্রী ড. সুব্বান্না আয়্যাপনের রহস্যজনক মৃত্যু, মৃতদেহ পাওয়া গেল কাবেরী নদীতে

মাণ্ড্য, ১৩ মে : বিগত কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে ১০ মে কর্ণাটকের মাণ্ড্য জেলার শ্রীরঙ্গপট্টণ তালুকে কাবেরী নদী থেকে উদ্ধার করা হল খ্যাতনামা মৎস্য বিজ্ঞানী ও পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত সুব্বান্না আয়্যাপনের মৃতদেহ।
৬৯ বছর বয়সি আয়্যাপন ছিলেন ভারতের ‘ব্লু রেভল্যুশন’-এর প্রধান স্থপতি। দেশের মৎস্যচাষ ও জলের জীববিজ্ঞান সংক্রান্ত আধুনিকীকরণের পেছনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদেহটি পচনধরা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে এবং শরীরে কোনও দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁর বাড়িতে মোবাইল ফোন রেখে যাওয়া এবং নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রাথমিক সূত্রের ভিত্তিতে আত্মহত্যার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আয়্যাপনের পরিবার ৭ মে তাঁকে শেষবার দেখতে পায় যখন তিনি মাইসুরুর অাক্কামহাদেবী রোডের ফ্ল্যাট থেকে একটি টু-হুইলারে বেরিয়েছিলেন। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল বিদ্যারণ্যপুরম থানায়। ময়নাতদন্তের পর তাঁর মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং চামুণ্ডি পাহাড়ের পাদদেশে রাজ্য মর্যাদায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী এবং দুই কন্যা।
সুব্বান্না আয়্যাপন ছিলেন ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ-এর প্রথম মৎস্যবিজ্ঞানী ডিরেক্টর জেনারেল, যা ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এর আগে এই পদে ক্রপ সাইন্স -এর বিজ্ঞানীরাই বসতেন। তিনি ছিলেন সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ফ্রেশওয়াটার একোয়াকালচার, সেন্ট্রাল ইনস্টিটিউট অব ফিশারিজ এডুকেশন -এর ডিরেক্টর, হায়দরাবাদের ন্যাশনাল ফিশারিজ ডেভেলপমেন্ট বোর্ড -এর প্রতিষ্ঠাতা সিইও, কৃষি গবেষণা ও শিক্ষামন্ত্রকের সচিব এবং ইম্ফলের সিএইউ -র উপাচার্য। মৃত্যুর সময় তিনি ছিলেন এনএবিএল-এর চেয়ারম্যান।
২০২২ সালে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করা হয়। আইসিএআর এক্স-এ লিখেছে, “গভীর শোকের সঙ্গে জানানো যাচ্ছে, প্রাক্তন সচিব ও ডিরেক্টর জেনারেল ড. এস. আয়্যাপনের মৃত্যুতে আইসিএআর পরিবার শোকাহত। তাঁর আত্মার চিরশান্তি কামনা করি!” সিএমএফ আরআই -ও টুইট করে জানায়, “ভারতীয় মৎস্য ও কৃষি গবেষণায় এক মহান দৃষ্টিভঙ্গির ধারক ছিলেন পদ্মশ্রী ড. এস আয়্যাপন। তাঁর বৈপ্লবিক কাজ লক্ষ লক্ষ কৃষক ও মৎস্যজীবীর জীবনমান উন্নত করেছে।” এনএবিএল-কিউসিআই তাদের পোস্টে জানিয়েছে, “আমরা গভীরভাবে শোকাহত পদ্মশ্রী ড. সুব্বান্না আয়্যাপনের আকস্মিক মৃত্যুতে। গুণমান এবং মান্যতা প্রক্রিয়ায় তাঁর অবদান আমাদের চিরকাল পথ দেখাবে।”