ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ বিরতির পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী; উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এনএসএ, সিডিএস ও তিন বাহিনীর প্রধানরা

নয়াদিল্লি, ১২ মে : ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির পর দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং পরবর্তী কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা পদক্ষেপ নিয়ে সোমবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান এবং তিন বাহিনীর প্রধানরা।

এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল দিনেশ কে. ত্রিপাঠি, এবং বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং। এছাড়া বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রী, আইবি ডিরেক্টর তপন ডেকা ও র’ (RAW) প্রধান রবি সিনহাও বৈঠকে অংশ নেন।

এই বৈঠক এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হল, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে শনিবার যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। পাকিস্তান এই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে, কারণ ৭ মে ভারতীয় বায়ুসেনার ৯০ মিনিটব্যাপী জবাবি অভিযানে পাকিস্তানের ১১টি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়ে যায়, যেখানে প্রায় ১০০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।

এই উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে ২২ এপ্রিল, যখন কাশ্মীরের পাহালগামে পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসীদের হাতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এর জবাবে ভারত ৭ মে পাকিস্তানে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে এয়ার স্ট্রাইক চালায়। পরে পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হানার মাধ্যমে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানালেও ভারতীয় বাহিনী তা সফলভাবে প্রতিহত করে।

ভারত-পাকিস্তান ডিজিএমও পর্যায়ের বৈঠক আজ নির্ধারিত রয়েছে, যেখানে যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং উত্তেজনা হ্রাসের বিষয়ে আলোচনা হবে। তার আগে এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। প্রধানমন্ত্রী মোদী রবিবার এক অনুরূপ বৈঠকে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন, সীমান্তে যদি গোলাগুলি বা হামলা হয়, তবে যেন পূর্ণ শক্তি নিয়ে জবাব দেওয়া হয়।

শনিবার বিকেল থেকে কার্যকর সংঘর্ষ বিরতির পর রবিবার থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর ও পশ্চিম সীমান্তে কোনো বড় ধরনের সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এই স্বস্তিকর পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ৩২টি বেসামরিক বিমানবন্দর, যেগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল, তা আবার খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় প্রশাসন পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং ভবিষ্যতের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রয়েছে বলে সূত্রের খবর।