খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস: আসামের আইসেংফা গোগোই ৫৫ কেজি বিভাগে স্বর্ণপদক জয় করে গড়লেন জাতীয় রেকর্ড

রাজগীর, বিহার, ১২ মে: খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস ২০২৫-এ রবিবার ৫৫ কেজি বিভাগে আসামের ১৭ বছর বয়সী ওয়েটলিফটার আইসেংফা গোগোই স্বর্ণপদক জয় করে নতুন জাতীয় যুব রেকর্ড গড়েছেন। রাজগীর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় তিনি মোট ১৮৩ কেজি (৮১ কেজি স্ন্যাচ + ১০২ কেজি ক্লিন অ্যান্ড জার্ক) উত্তোলন করেন, যা পশ্চিমবঙ্গের কোয়েল বার-এর ১৮২ কেজি জাতীয় রেকর্ড ভেঙে দেয়। কোয়েল এই রেকর্ড গড়েছিলেন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দোহা-তে অনুষ্ঠিত এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে।

আইসেংফা গোগোই, যিনি ২০২৩ সাল থেকে লখনউয়ে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার ন্যাশনাল সেন্টার অফ এক্সেলেন্স-এ কোচ রাহুল শর্মার অধীনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, খেলো ইন্ডিয়া-তে এটাই তার প্রথম স্বর্ণপদক। গত বছর চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত খেলো ইন্ডিয়া গেমসে তিনি পদক পাননি।

এবার তিনি স্ন্যাচ বিভাগে ৭৫ কেজি দিয়ে শুরু করে ৭৯ ও ৮১ কেজি তুলেন। এই ৮১ কেজি উত্তোলনের মাধ্যমে তিনি ওড়িশার মিনা সান্তার বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপে তৈরি রেকর্ড স্পর্শ করেন। মিনা এদিন ১৭৭ কেজি (৮০+৯৭) উত্তোলন করে রূপা জিতেছেন। অন্ধ্রপ্রদেশের হেমা শ্রী করাঙ্গি ১৬৪ কেজি (৭২+৯২) উত্তোলন করে ব্রোঞ্জ লাভ করেন।

আইসেংফা বলেন, “এটা আমার প্রথম খেলো ইন্ডিয়া সোনার পদক। আমার কোচ, বাবা-মা এবং এসএআই লখনউ সেন্টারকে ধন্যবাদ জানাই। আমি এখন কমনওয়েলথ ইউথ চ্যাম্পিয়নশিপে যোগ্যতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়েছি।”

আইসেংফা জানিয়েছেন, তাঁর বাবা দীপজ্যোতি গোগোই একজন প্রাক্তন পাওয়ারলিফটার, যিনি খেলোয়াড় হিসেবে রাজ্য পর্যায়ে না খেললেও ঘরে প্র্যাকটিস করতেন। সেই থেকেই আইসেংফার অনুপ্রেরণা। বর্তমানে দীপজ্যোতি শিবসাগরের কারুলাকালিয়া গ্রামে একটি ছোট টেন্ট হাউস ব্যবসা পরিচালনা করেন এবং মা নবানীতা একজন গৃহবধূ।

আইসেংফা বলেন, “আমি ছোটবেলায় বাবাকে দেখে শক্তিশালী হতে চেয়েছিলাম। সেই থেকেই ওয়েটলিফটিং শুরু করি ১৩ বছর বয়সে।”

তিনি আরও জানান, “আমি কহলই একটা ছোট ইনজুরি থেকে ফিরছি, তাই পদক জেতার আশা করিনি। আমি একজন খেলো ইন্ডিয়া অ্যাথলিট , যার মাধ্যমে প্রতি মাসে ₹১০,০০০ স্টাইপেন্ড পাই। এই ধরনের উদ্যোগ আমাদের আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে নিজেদের তুলনা করার সুযোগ দেয়।”

পাঞ্জাবের সুনীল সিং ৬১ কেজি বালক বিভাগে মোট ২৩৮ কেজি (১০৮+১৩০) উত্তোলন করে সোনা জিতেছেন। পশ্চিমবঙ্গের অনিক মোদী ২৩২ কেজি (৯৭+১৩৫) উত্তোলন করে রূপা এবং তামিলনাড়ুর জয়ানোভরাজ জে. ২৩১ কেজি (১০৪+১২৭) তুলে ব্রোঞ্জ জয় করেন।

৬৭ কেজি বালক বিভাগে মহারাষ্ট্রের ইয়াশ খান্ডাগালে ২৬৭ কেজি (১২২+১৪৫) উত্তোলন করে সোনা পান। অসমের অভিনব গোগোই (১১৬+১৩৫) ২৫১ কেজি উত্তোলন করে রূপা এবং হরিয়ানার সামির খান (১০৯+১৩২) ২৪১ কেজি উত্তোলন করে ব্রোঞ্জ লাভ করেন। সামিরও SAI লখনউয়ের এক প্রশিক্ষণার্থী।