বারাণসী, ৪ মে : পদ্মশ্রী যোগগুরু স্বামী শিবানন্দ প্রয়াত হয়েছেন বারাণসীতে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১২৮ বছর, এমনটাই দাবি তাঁর শিষ্যদের। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণে গত ৩০ এপ্রিল তাঁকে বারাণসীর বিইচইউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মরদেহ রাখা হয়েছে কাবীরনগর কলোনিতে তাঁর নিজ বাসভবনে, যেখানে সাধারণ মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আসছেন। শিষ্যরা জানিয়েছেন, আজ সন্ধ্যায় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শোকপ্রকাশ করে এক্স-এ লেখেন, “যোগ অনুশীলনকারী ও কাশীর বাসিন্দা শিবানন্দ বাবাজীর প্রয়াণের খবরে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর যোগ ও সাধনায় নিবেদিত জীবন দেশের প্রতিটি প্রজন্মকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। সমাজের সেবায় যোগের মাধ্যমে অবদানের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। শিবানন্দ বাবার শিবলোক গমন কাশীর সমস্ত বাসিন্দা এবং তাঁর অসংখ্য অনুগামীর জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই শোকের মুহূর্তে আমি তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।”
১৮৯৬ সালের ৮ আগস্ট, বর্তমান বাংলাদেশের সিলেট জেলায় জন্ম হয় বাবা শিবানন্দের। মাত্র ছয় বছর বয়সে দারিদ্র্য ও অনাহারে তিনি তাঁর পিতামাতাকে হারান। এরপর থেকেই এক কঠোর ও সংযমিত জীবনযাপন শুরু করেন তিনি। অর্ধভোজন, সুশৃঙ্খল রুটিন, এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁর জীবনের মূল ভিত্তি। ওঙ্কারানন্দ নামক এক সন্ন্যাসীর আশ্রয়ে এসে তিনি আধ্যাত্মিক শিক্ষা ও জীবনদর্শন লাভ করেন।
২০২২ সালে যোগ ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করে। শিষ্যরা বলেন, প্রতিদিন ভোর ৩টায় উঠে তিনি যোগচর্চা করতেন, নিজ হাতে নিজের সমস্ত কাজ করতেন। সেদ্ধ খাবার খেতেন এবং খাটে নয়, মাটির চাটাইয়েই বিশ্রাম নিতেন।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও বাবার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক্স-এ তিনি লেখেন, “কাশীর খ্যাতনামা যোগগুরু ‘পদ্মশ্রী’ স্বামী শিবানন্দ জির পরলোকগমনের খবরে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ‘যোগ’ ক্ষেত্রে তাঁর অতুলনীয় অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই।”
তিনি আরও বলেন, “আপনার সাধনা ও যোগময় জীবন সমাজের জন্য এক মহান প্রেরণা। আপনি যোগের প্রসারে আপনার গোটা জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমি বাবা বিশ্বনাথের কাছে প্রার্থনা করি, যেন তিনি এই পবিত্র আত্মার সদগতি দান করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত অনুগামীদের এই গভীর শোক সহ্য করার শক্তি দেন। ওম শান্তি।”

