গুজরাট জমি কেলেঙ্কারি : ভুজে ৫.৯২ কোটি টাকার রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি জব্দ করল ইডি

আহমেদাবাদ, ২৯ এপ্রিল : গুজরাটে সরকারি জমি অবৈধভাবে বেসরকারি প্রোমোটারের হাতে হস্তান্তরের মামলায় প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট (PMLA), ২০০২-এর আওতায় ভুজে ৫.৯২ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ইডির বক্তব্য অনুযায়ী, জব্দ করা সম্পত্তিগুলির মধ্যে রয়েছে কচ্ছ জেলার ভুজ শহরের রিয়েল এস্টেট প্লট, যা বেআইনি ভাবে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল।

এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত হলেন প্রদীপ শর্মা। তিনি ১৯৮১ সালে গুজরাট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে আইএএস পদে পদোন্নতি পান। তিনি রাজকোট ও কচ্ছ জেলার জেলা প্রশাসক ছিলেন। ইডির তদন্তে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের পদে থাকার সময় প্রদীপ শর্মা, অন্যান্য রাজস্ব আধিকারিকদের সঙ্গে মিলে সরকারি জমি বেআইনি ভাবে সঞ্জয় শাহ নামক এক প্রোমোটারকে বরাদ্দ করেন, যিনি সেই জমি আবাসিক প্লট হিসেবে রূপান্তর করেন এবং অপরাধমূলক উপার্জন সৃষ্টি করেন।

ইডির বিবৃতি অনুযায়ী, শর্মা সরকারের একাধিক প্রস্তাব ও নিয়ম উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত স্বার্থে জমি বরাদ্দ করেন, যা রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়। এই দুর্নীতি মামলার তদন্ত শুরু হয়েছিল সিআইডি ক্রাইম ব্রাঞ্চ, বর্ডার জোন, ভুজ-এর এক এফআইআরের ভিত্তিতে। অভিযোগে শর্মার বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল।

প্রদীপ শর্মা এর আগেও একটি পৃথক জমি দুর্নীতি মামলায় জানুয়ারি মাসে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল আদালত। সেই মামলায় তিনি ২০০৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থাকে ৪৭,১৭৩ বর্গমিটার সরকারি জমি বরাদ্দ করে আইন লঙ্ঘন করেছিলেন, যা তাঁর পদাধিকার অনুযায়ী অসমর্থনীয়।

তদন্তকারীরা আরও জানান, একই সংস্থার জন্য জমি বরাদ্দ সংক্রান্ত তিনটি আলাদা আবেদন একদিনে অনুমোদিত হয়, যা একীভূত সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম লঙ্ঘন করে। ২০১১ সালে রাজকোট সিআইডি ক্রাইম থানায় শর্মার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গ ও সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহারের ধারায় মামলা দায়ের হয়। এই জমি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র এই সাম্প্রতিক পদক্ষেপ গুজরাটে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা রক্ষার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।