‘শান্তির দ্বীপ’ বরাক উপত্যকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে জনতার প্রতি আহ্বান প্রদীপ দত্তরায়ের

শিলচর (অসম), ২০ এপ্রিল (হি.স.) : তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী যে বরাক উপত্যকাকে ‘শান্তির দ্বীপ’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন সেই ‘শান্তির দ্বীপ’ বরাক উপত্যকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এখানকার জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)-এর মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।

প্রদীপ দত্তরায় বলেন, ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদে পাস হওয়া এবং পরবর্তীতে আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভ সংগঠিত হচ্ছে। বরাক উপত্যকায়ও এর প্রভাব পড়েছে। ইদানীং এ নিয়ে পুলিশের সাথে সংঘাত ও ঢিল ছোঁড়াছুঁড়ির মতো দু-একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বরাকের সবাইকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের মুখ্য আহ্বায়ক দত্তরায়।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে প্রতিবাদ করার অধিকার সবার রয়েছে। তাই যাঁরা এই আইন নিয়ে অসন্তুষ্ট, তাঁরা সমাবেশ বা সরকারের কাছে স্মারকলিপি অবশ্যই প্রদান করুন। কিন্তু অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি বা হিংসার আশ্রয় নেওয়া একেবারেই ঠিক নয়।

প্রদীপ বলেন, এটা বুঝতে হবে, কিছু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ঠিক এটাই চাইছে। এ সবের মাধ্যমে দাঙ্গা বাঁধিয়ে তা থেকে রাজনৈতিক লাভ তোলার এক প্রচেষ্টা অবশ্যই চলছে। বিশেষত, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে এ নিয়ে আরও দুরভিসন্ধি চলতে পারে। তাই তিনি বরাক উপত্যকার জনগণকে কোনওভাবে এই ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিডিএফ-এর মুখ্য আহ্বায়ক আরও বলেন, তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধী বরাক উপত্যকাকে ‘শান্তির দ্বীপ’ বলে অভিধা দিয়েছিলেন। বলেন, এখানে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ভাষিক এবং ধর্মীয় জনগোষ্ঠী এক সাথে শান্তি ও সম্প্ৰীতির বজায় রেখে বসবাস করছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই উপত্যকার ঐতিহ্য। এমন-কি, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর সারা দেশ জুড়ে গণ্ডগোল চললেও, বরাকে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তাই তিনি কিছু সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর উস্কানিতে যাতে এখানে শান্তি ও সম্প্রীতি বিনষ্ট না হয় এ ব্যাপারে সবাইকে আবেদন জানিয়েছেন।

এদিকে বিডিএফ-এর মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, ওয়াকফ বিলের বিপক্ষে সংসদে যাঁরা ভোট দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৪০ জন মুসলিম সাংসদ এবং বাকি ১৯২ জন হিন্দু সাংসদ ছিলেন। তাই এক্ষেত্রে মুসলিমরা যে একা হয়ে পড়েছেন তা মোটেই নয়।