আগরতলা, ১৬ এপ্রিল : মোহনপুরের গোপালনগর এলাকায় বুধবার এক সংবেদনশীল ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন দিনের আলোতে মুসলিম পাড়ার একটি বাড়িতে গরু জবাইয়ের দৃশ্য সামনে আসে। জায়নাল মিয়ার বাড়ির উঠোনে এই গরু জবাইয়ের ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, গোপালনগর এলাকায় অধিকাংশ বাসিন্দাই হিন্দু সম্প্রদায়ের। এমন এলাকায় গরু জবাইয়ের ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই বহু হিন্দু যুবক ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং গরুর মাংস কাটার দৃশ্য দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
অভিযোগ উঠেছে, এই কাজের নেতৃত্বে ছিলেন পাড়ার আবু মিয়া। তবে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আগেই তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। উপস্থিত ছিলেন সঞ্জিত দেবনাথ নামক এক হিন্দু যুবক, যার কাছ থেকে গরুটি সংগ্রহ করা হয়েছিল বলেও জানা গেছে।
উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন শাসকদলের স্থানীয় নেতা অজয় দেব, নির্মল দেব, বিকাশ দাস প্রমুখ। এলাকা পরিদর্শন করেন এলাকার বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি এলাকাবাসীকে শান্ত থাকার বার্তা দেন এবং প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
সিধাই থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পাশাপাশি গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয় পুলিশ ও সিআরপিএফ বাহিনী।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মহম্মদ কালিম নামের এক বিএসএফ জওয়ান, যিনি উর্দি পরিহিত অবস্থায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকায় সন্দেহ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। তারা প্রশ্ন তোলেন, সরকারি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তিনি কেন এমন একটি স্পর্শকাতর ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দাবি, গোহত্যার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং বিএসএফ জওয়ান মহম্মদ কালিমের বিরুদ্ধেও যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ঘটনাকে ঘিরে এলাকার পরিস্থিতি এখনো থমথমে। প্রশাসন সবসময় পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ আধিকারিকরা।

