মানবিকতাই বড় ধর্ম! বিপদে দিনমজুর মনোরঞ্জনের পাশে দাঁড়ালেন পঞ্চায়েত প্রধান

আগরতলা, ৯ এপ্রিল:
মানবিকতা দেখাতে গিয়ে নিজেই আজ বিপদের মুখে পড়েছেন দিনমজুর মনোরঞ্জন দাস। আর ঠিক সেই সময়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন কালী কৃষ্ণনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজয় মজুমদার। বুধবার সকালবেলায় মনোরঞ্জনের হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়ে তিনি জানালেন, “মানুষ মানুষের জন্য।”

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এক মাস আট দিন আগে সাদা টিলা গ্রামে একটি রাবার বাগানে হঠাৎ আগুন লাগে। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মনোরঞ্জনের চোখে পড়ে ঘটনাটি। কোনও কিছু না ভেবে, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাউদাউ করে জ্বলা আগুন নেভাতে গিয়ে ঝলসে যায় তার দুটি পা। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পাড়ার কিছু মানুষ। তারাই মনোরঞ্জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যান কাঠালিয়া সামাজিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে।

প্রাথমিক চিকিৎসার পর ডাক্তাররা জানান, উন্নত চিকিৎসা ছাড়া তার সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব নয়। কিন্তু দিনমজুরি করে সংসার চালানো মনোরঞ্জনের পক্ষে এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা করানো প্রায় অসম্ভব। পরিবারে ৬ জন সদস্য, আয়ের একমাত্র উৎস তিনিই। এই পরিস্থিতিতে চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল তার।

মনোরঞ্জনের এই করুণ পরিস্থিতির কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন কালী কৃষ্ণনগর পঞ্চায়েতের প্রধান বিজয় মজুমদার। তিনি নিজের মার্চ মাসের সম্মানিক ভাতা – ৫ হাজার টাকা – তুলে দেন মনোরঞ্জনের হাতে। এদিন তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দুই নম্বর ওয়ার্ডের দুইজন পঞ্চায়েত সদস্যও।

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, শুধু গ্রাম উন্নয়ন করলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। মনোরঞ্জনের অবস্থা দেখে আমি নিজেও মর্মাহত হয়েছি। সাময়িকভাবে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছি। প্রয়োজনে আর্থিক সাহায্য জোগাড় করে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হবে।

এই মানবিক ভূমিকার জন্য কালী কৃষ্ণনগর পঞ্চায়েত প্রধানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সমাজের অন্যদের কাছেও এই ঘটনা নিঃসন্দেহে এক বড় শিক্ষা।