আগরতলা, ৫ এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার সভাপতিত্বে আজ সচিবালয়ে রাজস্ব দপ্তরের রাজ্যস্তরীয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জলাশয় ডাইভারশন এবং বরাদ্দকৃত জমি বিক্রয় ও হস্তান্তরের অনুমতি চেয়ে প্রস্তাবগুলি বিবেচনার জন্য তোলা হয়।
বৈঠকে রাজস্ব ও জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, আইন দপ্তরের সচিব সঞ্জয় ভট্টাচার্য্য সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সমস্ত জেলার জেলাশাসক ও সমাহর্তাগণও অংশ নেন। বৈঠকে উপদেষ্টা কমিটি মোট ১৪৯টি আবেদন বিবেচনায় নিয়ে আসে। এর মধ্যে জলাশয় ডাইভারশনের অনুমতির জন্য ৬১টি এবং বরাদ্দকৃত জমি বিক্রয়ের জন্য ৮৮টি আবেদন রয়েছে। আজকের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা জেলা প্রশাসনকে ভূমি রাজস্ব আইন এবং নিয়ম নীতি কঠোরভাবে কার্যকর করার নির্দেশ দেন। কোনও পরিস্থিতিতেই যাতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মকানুন লঙ্ঘন না হয় তা সুনিশ্চিত করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন। জমি হস্তান্তর ও নামজারি এবং কৃষি ও জলাশয়ের ডাইভারশনের বিষয়েও কঠোরভাবে নজরদারি রাখতে মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বরাদ্দকৃত জমি বিক্রির অনুমতির আবেদনপত্র খতিয়ে দেখতে মহকুমা শাসকের সভাপতিত্বে এবং মেডিক্যাল অফিসার সহ মহকুমার অন্যান্য আধিকারিকদের নিয়ে মহকুমা পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটি প্রতিটি আবেদনের সত্যতা ও প্রয়োজনীয়তা একটি স্বচ্ছ ব্যবস্থার মাধ্যমে যাচাই করবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সর্বশেষ রাজ্যস্তরীয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়েছিলো। মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনকে রাজস্ব সংক্রান্ত বিষয় বিশেষ করে জমির হস্তান্তর, রেজিস্ট্রেশন এবং জমির নামজারি, কৃষি জমি ও জলাশয়ের ডাইভারশন এবং বরাদ্দকৃত জমি বিক্রয়ের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী রাজস্ব প্রশাসনকে আরও শক্তিশালী করতে এবং সর্বস্তরে স্বচ্ছতা আনতে গুরুত্ব আরোপ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশানুসারে রাজস্ব প্রশাসনকে ক্ষেত্র পর্যায়ে আরও শক্তিশালী করতে গত এক বছরে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে কোনও বেআইনী কাজের সাথে আপোস না করা হয়। জমি সংক্রান্ত কোন ধরনের বে-আইনী কাজের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স (আপোসহীন) নীতিতে অগ্রসর হচ্ছে।
এর মধ্যে রেভেনিউ ইন্সপেক্টর পদে ১৪ জন, তহশিলদার পদে ১৬৪ জন, জুনিয়র সার্ভেয়ার পদে ১০ জন, আমিন পদে ২৯ জন এবং মুহুরী পদে ৩৭ জন নিয়োগের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পদগুলিতে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এছাড়াও রাজস্ব দপ্তরের রেভেনিউ ইন্সপেক্টর, আমিন, সিস্টেম অ্যানালিস্ট ইত্যাদি দুই শতাধিক পদে নিয়োগের জন্য নতুন পদ সৃষ্টি করার প্রক্রিয়া চলছে। নিবন্ধিত দলিলের উত্তরাধিকার সম্পর্কিত তথ্য আপলোড করা হবে যাতে কোন সম্ভাব্য ক্রেতা, জমি কেনার আগে জমির মালিকানা দেখতে পারে। প্রতিটি জমি প্লটের সনাক্তকরণে ১৪ সংখ্যার ইউনিক ল্যান্ড পার্সেল আইডেন্টিফিকেশন নম্বর প্রতিটি জমির জন্য বরাদ্দ করা হচ্ছে। রাজস্ব দপ্তর কর্তৃক ব্যবহৃত ই-জমি, কোর্ট মনিটরিং সিস্টেম, ত্রিপুরা ওয়েব ম্যাপ, জমি পরিষেবা, ন্যাশনাল জেনেরিক ডকুমেন্ট সিস্টেম ইত্যাদি ১২টি সফটওয়ারের সাইবার সিকিউরিটি অডিট করা হয়েছে যাতে জমির মালিকদের তথ্য সুরক্ষিত থাকে। এই সমস্ত পদক্ষেপ রাজস্ব প্রশাসন শক্তিশালী করার পাশাপাশি কাজকর্মে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা এবং নাগরিকদের পরিষেবা এ এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করছে। রাজস্ব দপ্তর থেকে এক প্রেস রিলিজে এই: জানানো হয়েছে।