আগরতলা, ০১ এপ্রিল : ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা মঙ্গলবার বিধানসভায় জানিয়েছেন, রাজ্যে একজন ওষুধ পরিদর্শকের পদ শূন্য রয়েছে এবং জাল ওষুধ সংক্রান্ত একটি মামলা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
বাজেট অধিবেশনের সপ্তম দিনে কংগ্রেস বিধায়ক গোপাল চন্দ্র রায়ের এক প্রশ্নের উত্তরে ডা. সাহা এই তথ্য দেন। বিধানসভায় আলোচনার সময় বিধায়ক রায় দেশে নকল ওষুধের বিপজ্জনক পরিস্থিতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকার ওষুধ বিক্রি হয়, যার মধ্যে ৩ লক্ষ কোটি টাকার জেনেরিক ওষুধ এবং ২ লক্ষ কোটি টাকার ব্র্যান্ডেড ওষুধ অন্তর্ভুক্ত। চমকপ্রদ বিষয় হলো, এর মধ্যে ২০,০০০ কোটি টাকার জাল ব্র্যান্ডেড ওষুধ বাজারে রয়েছে। অন্য একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, উত্তর-পূর্ব ভারতে এই ধরনের নকল ওষুধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।”
তিনি আরও জানতে চান, সরকার কি রাজ্যের ৮টি জেলা ও ২৩টি মহকুমায় ওষুধ পরীক্ষাগার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে এবং ওষুধ পরিদর্শকের সংখ্যা বাড়ানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে।
উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী ডা. সাহা বিধানসভায় আশ্বস্ত করে জানান যে, সরকার বিষয়টি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যে ৪০ জন পরিদর্শক নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছেন, যাদের মধ্যে ১৮ জন সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত এবং ৬ জন পদোন্নতি পেয়েছেন। তবে, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে একজন কর্মকর্তার অবসরের ফলে একটি পদ শূন্য রয়েছে।
জাল ওষুধ সংক্রান্ত বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাহা বর্ধমান ফার্মা মামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “সমস্ত বিধায়কেরা বর্ধমান ফার্মা মামলার বিষয়ে অবগত আছেন। এই মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার বিশেষ আদালতে ড্রাগ ইন্সপেক্টর কৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য মামলাটি দায়ের করেছেন, যার মামলা নম্বর ডিসি-০১/২০। এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ২১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সম্পন্ন হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানি ৫ মে ২০২৫ তারিখে নির্ধারিত রয়েছে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার নকল ওষুধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এবং বিধায়ক শ্রীরায় যদি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা সম্পর্কে অবগত থাকেন, তবে সরকারকে জানানোর অনুরোধ রাখছি। তিনি বলেন, “আমাদের পরিদর্শকেরা রাজ্যের সর্বত্র কাজ করছেন। তবে, বিধায়ক শ্রীরায় যদি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা আমাদের নজরে আনেন, তাহলে আমরা অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব।”