কমিউনিস্টরা বরাবরই হিন্দু বিরোধী, ফেসবুক পোস্টের কোনো কথা ভুল প্রমাণ করতে পারলে আমি শাস্তি মাথা পেতে নেবো: মন্ত্রী সুধাংশু

আগরতলা, ২০ মার্চ : “ভারতের নাগরিক হিসেবে সত্য কথা বলার অধিকার রয়েছে আমার। আমি যা পোস্ট করেছি সেটি সত্যি। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে যে আমি মিথ্যে কথা বলেছি তাহলে যা শাস্তি দেওয়া হবে আমি তা মাথা পেতে গ্রহণ করবো”। নিজের বিতর্কিত ফেসবুক পোস্ট নিয়ে এমনটাই বললেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস। তাঁর কথায়, ওনার ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্যের সৃষ্টি হচ্ছে। বিরোধীরা এর সমালোচনা করছেন। কিন্তু উনি যে কথাগুলি বলেছেন সেগুলি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। ইতিহাসে এর সাক্ষী রয়েছে। যারা এধরনের বক্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক প্রসঙ্গ সৃষ্টি করছে তাদের প্রত্যেকটি শব্দ গুরুত্ব সহকারে পড়া উচিত বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ঔরঙ্গজেবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তাঁর শাসনকালের ভুয়োশি প্রশংসাও করেছেন। কিন্তু ভারতবর্ষের শান্তিপ্রিয় নাগরিকরা হিন্দু হোক বা মুসলিম, কেউই ঔরঙ্গজেবের শাসনকালকে সমর্থন করবেন না। ইসলাম ধর্ম গ্রহন না করার অপরাধে ঔরঙ্গজেব বাচ্চা থেকে শুরু করে বহু নিরীহ হিন্দুকে হত্যা করেছে, শুধুমাত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করার অপরাধে। ইতিহাস সাক্ষী এই ঘটনাগুলো মিথ্যে না। এছাড়াও মথুরায় কৃষ্ণ মন্দির ভেঙে সেখানে মসজিদ তৈরি করেছে ঔরঙ্গজেব। আরো বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু মন্দির মন্দিরের অর্ধেক থেকে সেখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছে। এখনো মসজিদের ভেতরে হিন্দু মন্দিরের ছাপ রয়েছে। এই ঘটনাগুলি দেখা সত্ত্বেও ভারতীয় হিসেবে ঔরঙ্গজেবকে সমর্থন করা উচিত নয়। সেই কারণেই ঔরঙ্গজেব কে পাপী বলে সম্বোধন করেছেন তিনি, এমনটাই বক্তব্য মন্ত্রীর।

উল্লেখ্য, জিতেন্দ্র চৌধুরী ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের নিকট মন্ত্রী সুধাংশু দাসের ফেসবুক পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। এই ঘটনায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। এ বিষয়ে মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, কমিউনিস্টরা বরাবরই হিন্দু বিরোধী। এখানে পাপীকে পাপি বললে জাতি দাঙ্গা হয়ে যায়। কিন্তু হিন্দুদের মন্দির ভেঙে তার অর্ধেক থেকে মসজিদ তৈরি করলেও হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারবেনা। এ ধরনের নীতিতেই বিশ্বাসী সিপিআইএম।

মন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৮৯ সালে যখন পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী সরকার ছিল তখন তারা শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে এক সার্কুলার জারি করেছিল। সে সার্কুলারে বলা হয়েছিল, হিন্দু বিরোধী শক্তি যারা মন্দির ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিল, লক্ষ লক্ষ হিন্দুদের হত্যা করেছিল সেই ইতিহাস কোন বইয়ে লেখক বা কবি লিখতে পারবেন না। এই সার্কুলারের বিরুদ্ধে বামেরা বহু আগেই হিন্দু বিরোধী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, বামেরা সর্বদাই হিন্দু রীতিনীতিকে আঘাত করে গেছে। তারা বিবেকানন্দকে পাগল সন্ন্যাসী বলে। বামপন্থীরা সর্বদাই হিন্দু ধর্মের কৃষ্টিসংস্কৃতিকে মুছে ফেলার কাজ করছে বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী সুধাংশু দাস।

সামাজিক মাধ্যমে মন্ত্রী সুধাংশু দাসের বক্তব্য ঘিরে বিভিন্ন মহল থেকে যখন প্রশ্ন উঠছে তখন মন্ত্রী নিজে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন। উনার বক্তব্য কোনো অংশেই মিথ্যে বা ভুল নয়। এমনটাই দাবি করলেন মন্ত্রী। এছাড়াও এ ধরনের বক্তব্যকে ঘিরে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। উনার কথায় বামেরা হিন্দু ধর্ম বিরোধী। তাই হিন্দু ধর্ম নিয়ে কথা উঠলে বামপন্থীরা একে জাতি দাঙ্গার আখ্যা দিয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *