সরকারের লক্ষ্য সব অংশের মানুষের সহযোগিতায় বিকশিত ত্রিপুরা গড়ে তোলা : কৃষিমন্ত্রী

আগরতলা, ১৭ ফেব্রুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখানো পথে রাজ্যের নারী, যুবক, কৃষক ও গরীব অংশের মানুষের কল্যাণে সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী এই অংশের মানুষের কল্যাণে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। রাজ্য সরকারের লক্ষ্য সব অংশের মানুষের সহযোগিতায় বিকশিত ত্রিপুরা গড়ে তোলা। আজ সন্ধ্যায় পূর্বাশা প্রাঙ্গণে রাজ্যের প্রথম এফপিও-২০২৫ মেলার উদ্বোধন করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ একথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষকগণ হলেন আমাদের অন্নদাতা। আত্মনির্ভর হওয়ার জন্য সবাই মিলে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে। উল্লেখ্য, এফপিও (কৃষক উৎপাদক সংগঠক) হল কৃষকদের দ্বারা গঠিত একটি সংগঠন। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকগণ এফপিওতে একত্রিত হয়ে তাদের কৃষিপণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন ও ব্যবসায়িক কাজকর্ম পরিচালনা করেন। এর মূল উদ্দেশ্য হল কৃষকদের আর্থিক উন্নতি করা। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বাজারে ন্যায্যমূল্যে ফসল বিক্রি করা। কেন্দ্রীয় সরকার ২০২০ সালে কৃষক উৎপাদক সংগঠন গঠনের ও উন্নয়নে প্রকল্প চালু করে।

তিনদিন ব্যাপী এফপিও মেলার উদ্বোধন করে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ আরও বলেন, রাজো ৫৮টি ব্লকে বর্তমানে ৫৮টি এফপিও রয়েছে। রাজ্যের ১০,৪৩৪ জন কৃষক এফপিওগুলির অধীনে কাজ করছেন। তিনি বলেন, পূর্বতন সরকারের সময়ে কৃষকদের মাসিক আয় ছিল প্রায় ৬,৫৮০ টাকা। বর্তমানে কৃষকদের আয় বেড়ে ১৩ হাজার ৫৯০ টাকা হয়েছে। কৃষকদের আয় বৃদ্ধির পেছনে তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের কথা উল্লেখ করেন।

এক্ষেত্রে তিনি কৃষক সম্মাননিধি প্রকল্প, সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের বীজ, সার সরবরাহ করা, কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ, মাটি পরীক্ষা করা, ফসল বীমা যোজনা, কৃষক বন্ধু কেন্দ্র তৈরী করা প্রভৃতি প্রকল্প রূপায়ণের কথা উল্লেখ করেন। প্রসঙ্গক্রমে তিনি লোকসভায় পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটে কৃষি ক্ষেত্রে বরাদ্দের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রেই আমাদের আত্মনির্ভর স্বয়ম্ভর ত্রিপুরা গড়ে তুলতে হবে। এই কাজে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি তিনদিন ব্যাপী এফপিও মেলার সাফল্য কামনা করেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে সারা রাজ্যে কৃষকদের আত্মনির্ভর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। তাতে কৃষকগণও উপকৃত হচ্ছেন। তারা আত্মনির্ভর হতে শুরু করেছেন। সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, কৃষিজাত উৎপাদন বৃদ্ধি করতে ও তাদের আত্মনির্ভর করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাজ করছে। লোকসভায় পেশ করা কেন্দ্রীয় বাজেটেও কৃষকদের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অষ্টলক্ষ্মী মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল তাতে রাজ্যের ৫৭ জন তাদের উৎপাদিত সামগ্রী নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছিলেন। সাংসদ আশা প্রকাশ করেন সবার সহযোগিতায় ত্রিপুরা স্বয়ংসম্পূর্ণ রাজ্য হয়ে উঠবে। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অনুষ্ঠানের সভাপতি কর্পোরেটর অলক ভট্টাচার্য। সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ফণিভূষণ জমাতিয়া। উপস্থিত ছিলেন উদ্যান পালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস, কৃষি বিপণন দপ্তরের অধিকর্তা মানিকলাল দেববর্মা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *