মণিপুরে জারি রাষ্ট্রপতি শাসন, মুখ্যমন্ত্ৰী পদে বীরেনের উত্তরসুরি মনোনয়নে ঐকমত্যে জটিলতা

ইমফল, ১৩ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে এন বীরেন সিঙের ইস্তফার পর আজ তিনদিনের মাথায়ও তাঁর উত্তরসূরি চয়ন করতে না পারায়, রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছে। ফলে রাজ্যে চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৭৪ (১) অনুসারে রাজ্য বিধানসভাগুলিকে তাদের শেষ অধিবেশনের ছয় মাসের মধ্যে অধিবেশন বসতে হয়। মণিপুরে পূর্ববর্তী বিধানসভা অধিবেশন গত বছর ২০২৪ সালের ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে গতকাল ১২ ফেব্রুয়ারিবুধবারকে পরবর্তী অধিবেশনের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে রাজ্যপাল অজয়কুমার ভাল্লা ১০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার)-র জন্য নির্ধারিত বাজেট অধিবেশন বাতিল করেছিলেন। কারণ এর একদিন আগে ৯ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন নংথমবাম বীরেন সিং।

অনাস্থা প্রস্তাব এবং প্রত্যাশিত আস্থা ভোটের প্রাক্কালে বীরেন সিঙের পদত্যাগ রাজ্য বিধানসভায় রাজনৈতিক ডামাডোলের সৃষ্টি করেছে। বীরেন সিঙের পদত্যাগের পর দফায় দফায় বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী চয়নে বৈঠক করছিলেন উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিজেপির প্রভারী সম্বিত পাত্রা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মনোনয়নে ঐকমত্যে পৌঁছতে না পারায় আজ রাজ্যে জারি করা হয়েছে রাষ্ট্রপতি শাসন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ২০২৩ সালের ৩ মে মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেই সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতি (এসটি) তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য রাজ্য সরকারকে এক নির্দেশ দিয়েছিল। এর প্রতিবাদে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন, মণিপুর’-এর উদ্যোগে ওইদিন (৩ মে ২০২৩) বিকালে মণিপুরের কয়েকটি উপজাতি সংগঠন ‘সংহতি মিছিল’-এর আয়োজন করেছিল। ওই মিছিলের পর থেকে অশান্ত হয়ে পড়েছে মণিপুর। বেড়েছে মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে জাতিগত সহিংসতার ঘটনা।

সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যৰ্থতার দাবি তুলে বীরেন সিংকে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফার দাবি তুলেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। ইত্যবসরে দুবার পদত্যাগপত্র পেশ করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অনেকে তাঁকে পদত্যাগ করতে বাধা দেন। তাই এবার একেবারে নীরবে মুখ্যমন্ত্ৰী পদে ইস্তফা দিয়েছেন নংথমবাম বীরেন সিং।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *