(বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য্য)
আগরতলা, ৬ ফেব্রুয়ারী: উত্তর জেলার বিভিন্ন আন্ত:রাজ্য সীমান্ত দিয়ে ব্যাপক হারে বার্মিজ সুপারী রাজ্যে প্রবেশ করছে। এই অবৈধ বার্মিজ সুপারি আমদানি বাণিজ্যের সাথে শাসক বিজেপি দলের একটি অসাধু চক্র জরিত রয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু তাতে রাজ্যের আম কৃষকদের বিপদ ডেকে আনছে।
প্রসঙ্গত, এক সময়ে রাজ্য স্থানীয়ভাবে দেশী সুপারি উৎপাদিত হত। দেশী সুপারি উৎপাদন এবং বিক্রি করে বহুমানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকত। রাজ্যের বেকার যুবকদের ও রোজগারের অন্যতম উপায় ছিল সুপারি চারা উৎপাদন এবং বিক্রি। কিন্তু বর্তমানে সুপারি চাষে ক্রমশ উৎসাহ হারাচ্ছে বেকার যুবক থেকে শুরু করে বড় সুপারি উৎপাদকরা। অথচ কয়েক বৎসর আগেও সুপারি উৎপাদনে প্রতিযোগিতা চলতো। সাধারণ বেকার যুবক থেকে শুরু করে কৃষকরা সুপারি চাষে মনোযোগী ছিল। তাদের উৎপাদিত সুপারি দাম ছিল সন্তোষজনক। কৃষক যুবকরা সুপারি বাগানে উৎসাহী ছিল যথেষ্ট পরিমানে।
বর্তমানে বার্মিজ সুপারী সহজ লব্য হওয়ার কারণে বাজারে প্রচণ্ডভাবে স্থানীয় সুপারি উৎপাদন মার খাচ্ছে বার্মিজ সুপারি হাতের নাগালের মধ্যে আসার কারণে রাজ্যের সুপারি আর ক্রেতাদের মন টানছে না। দেশীয় সুপারি রপ্তানির ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা সমস্যা। এক সময়ে আসামে প্রচুর রাজ্যের সুপা রি রপ্তানি হত। কিন্তু বর্তমানে আসামে ত্রিপুরার উৎপাদিত সুপারি নিয়ে যেতে উৎপাদ দের বহু ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।তাছাড়া আসামে আগের মত ত্রিপুরার সুপারির চাহিদা নেই। অথচ একটা সময় ত্রিপুরা রাজ্যের উৎপাদিত সুপারির একটা বড় বাজার ছিল। শিলচর, করিমগঞ্জ, বদরপুর সহ আসামের বেশ কয়েকটি এলাকায় রপ্তানি হত। কিন্তু বর্তমানে বার্মিজ সুপারির দৌলতে রাজ্যের সুপারির চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। কয়েক বৎসর আগেও বহিরাজ্যের সুপারি পাইকাররা রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ে বাগান ঘুরে ঘুরে বাগানচুক্তি সুপারি ক্রয় করে নিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে বার্মিজ সুপারি আসার ফলে বহি:রাজ্যের পাইকারি ব্যবসায়ীরা আগের মত আসছে না। ফলে চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
বহু বাগানে সুপারি বিক্রি না হয়ে গাছের নিচে পড়ে শুকাচ্ছে। এ নিয়ে সুপারি চাষিদের মনে চরম হতাশার জন্ম হয়েছে। রাজ্যের গ্রাম পাহাড়ের মানু ষের জীবিকা সুপারির উপর নির্ভরশীল ছিল। এখন আঘাত এসেছে। রাজ্যে ব্যাপক হারে বার্মিজ সুপারি ঢুকছে।এতে উত্তর জেলার আর্থ সামাজিক অবস্থার অবস্থার উপর ভয়ঙ্করভাবে প্রভাব পডছে।