নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৬ জানুয়ারি:
বহু প্রতিকূলতা কাটিয়ে রাজ্যে আগরতলা গভর্নমেন্ট ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এই কলেজের আসন সংখ্যা ৫০ থেকে বেডে ৬৩ হয়েছে। আইজিএম হাসপাতালে নতুন করে আরও একটি বিল্ডিং নির্মান করা হবে। ডোনার মন্ত্রক থেকে ইতিমধ্যে এর জন্য ২০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আজ আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন ত্রিপুরা শাখার সহযোগিতায় ন্যাশনাল ওরাল হেলথ প্রোগ্রাম, ন্যাশনাল হেলথ মিশন ত্রিপুরা শাখা আয়োজিত ২৩ তম বার্ষিক দন্ত চিকিৎসকদের সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। এই উপলক্ষ্যে ডেন্টাল সার্জনদের দু’দিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, চিকিৎসকদের উপর মানুষের বিরাট আস্থা রয়েছে। চিকিৎসকরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের মাধ্যমেই ভবিষ্যতে স্মরণীয় হয়ে থাকেন। তাই দন্ত চিকিৎসকদের উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানে আন্তরিকভাবে কাজ করা আবশ্যক। প্রত্যন্ত জনপদে উন্নতমানের চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। একজন ব্যক্তি কিভাবে কিংবদন্তি হতে পারেন ভারতের আধুনিক দন্ত চিকিৎসার জনক ডা. রফিউদ্দিন আহমেদ হচ্ছেন এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। ডা. রফিউদ্দিন আহমেদ এর জন্মদিন ২৪শে ডিসেম্বর তারিখটিকে জাতীয় দন্ত চিকিৎসক দিবস হিসাবে উদ্যাপন করা হয়। ডা. রফিউদ্দিন আহমেদের কর্মজীবনের প্রেক্ষাপট মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আলোচনায় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে অবহেলা ও সচেতনতার অভাবে দন্তজনিত বিভিন্ন সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। এজন্য মুখ ও মুখগহ্বরের পরিচর্যা সম্পর্কে আরও বেশি জনসচেতনা বাড়াতে গুরুত্ব দিতে হবে। দন্ত চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী দম্ভ রোগীদের সুবিধার্থে ই-সঞ্জিবনী মাধ্যমে টেলি পরামর্শ পরিষেবা চালু সহ রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নয়নের কথাও উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক ডা: রফিউদ্দিন আহমেদের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন। তাছাড়াও অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালে প্রয়াত রাজ্যের দু’জন দন্ত চিকিৎসকের স্মৃতিতে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে দন্ত চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ডা. উৎপল চন্দকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরে সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, জনসচেতনতার অভাবে মানুষ দন্তজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রন্ত হন। রাজ্য সরকার দন্ত চিকিৎসক পরিষেবাকে সহজলভ্য ও সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। ডেন্টাল সার্জনদের এধরণের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি রাজ্যের ডেন্টাল চিকিৎসা পরিষেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে সচিব আশাব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন ত্রিপুরা রাজ্য শাখার মিশন ডিরেক্টর ড. সমিত রায় চৌধুরী, স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রফেসর (ডা) সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. অঞ্জন দাস, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা ডা. এইচ পি শর্মা, আগরতলা গভর্নমেন্ট ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. শালু রায়, হেলথ সার্ভিস ডিরেক্টরেটের ডেন্টাল বিভাগের উপ-অধিকর্তা ডা রাজেশ অনিল আচার্য্য, ২৩তম বার্ষিক দন্ত সম্মেলনের চেয়ারপার্সন ডা. সমীর রঞ্জন দত্ত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সভাপতি ডা. এস এম আলী। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী একটি স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন। তাছাড়াও দন্ত চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি এবং উদ্যোগ সমূহ সম্বলিত তথ্যচিত্র অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠানস্থলে প্রদর্শিত বিভিন্ন শিক্ষামূলক স্টলগুলিও পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ।