খুব সহসাই গ্রুপ ডি চাকরির জন্য অফার দেওয়া হবে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২৯ ডিসেম্বর: জনগণের সার্বিক কল্যাণে নিরন্তর কাজ করছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। মানুষের প্রয়োজনের কথা ভেবেই কাজ করছে সরকার। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজারের অধিক সরকারি চাকরি প্রদান করা হয়েছে। খুব সহসাই গ্রুপ ডি চাকরির জন্য অফার দেওয়া হবে।

রবিবার মান্দাই মন্ডলের ৫নং বুথের নাগরিকদের সাথে মাইলুমা স্কুল মাঠে আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন কি বাত কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

এই কার্যক্রমে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, দেশ-বিদেশে চলমান বিভিন্ন সদর্থক ঘটনাক্রমকে জনসাধারণের জন্য তুলে ধরার জনপ্রিয় কার্যক্রম ‘মন কি বাত’ এর ১১৭ তম পর্ব প্রচারিত হয়েছে আজ। আজকের পর্বে যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সংবিধানের ৭৫ বর্ষ উৎযাপন, মহাকুম্ভ, ডিজিটাল মিডিয়া কনক্লেভ, বস্তর অলিম্পিক সহ একাধিক বিষয় উত্থাপন করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে ত্রিপুরা। এখন রাজ্যেই সফলভাবে কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। আর এই কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করতে হলে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন হয়। সেই জায়গায় একটি পয়সা ছাড়াই সরকারি ব্যবস্থাপনায় কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়েছে।

আগামীদিনে বোন মেরু ট্রান্সপ্ল্যান্ট, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এখন মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা আরো বেড়েছে। প্রতি বছর এখন প্রায় ৪০০ ডাক্তার আমাদের রাজ্যের মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করছেন। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে ১০০টি আসন রয়েছে। এরমধ্যে আরো ৫০টি আসনের জন্য আবেদন করেছেন তারা। অথচ আগে আমাদের কোন মেডিকেল কলেজ ছিল না। কিন্তু এখন আমাদের মেডিকেল কলেজগুলিতে বাইরে থেকেও ছেলেমেয়েরা পড়াশুনা করতে আসছে। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সুপার স্পেশালিটি বিভাগ চালু করা হয়েছে। ডোনার মন্ত্রক সেই অর্থ বরাদ্দ করেছে। একেবারে কর্পোরেট স্টাইলে সুপার স্পেশালিটির ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্যে এসে ডেন্টাল কলেজের উদ্বোধন করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই কলেজেও আসন সংখ্যা বেড়েছে। এখন ৬৩টি আসন হয়েছে। ৫০টি আসনের নার্সিং কলেজ হয়েছে। আমাদের ফার্মেসি কলেজ রয়েছে। আগামীদিনে হোমিওপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক কলেজ গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আগামীদিনে আরো প্রায় ৭০০ কোটি ব্যয়ে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় জায়গা দেখা হয়েছে। আর এসমস্ত পরিষেবা গড়ে উঠলে চিকিৎসার জন্য রাজ্যের মানুষকে বাইরে যেতে হবে না। রাজ্যে উন্নত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য প্রাক নিলামে বাইরের নামীদামী সংস্থাগুলি অংশ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির মাধ্যমে আমাদের নানাভাবে সহযোগিতা করছেন। গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী রাজ্যে এসে পর্যালোচনা বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। আমরা তাঁকে বিভিন্ন বিষয়ে অবহিত করি। সম্প্রতি রাজ্যে নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের ৭২তম প্ল্যানারি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ত্রিপুরায় এধরণের বড় আয়োজন করা যাবে সেটা কেউ ভাবেন নি।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পৌরহিত্যে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এই অধিবেশনে অষ্টলক্ষীর সমস্ত রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীগণ সহ আধিকারিকগণ অংশগ্রহণ করেছিলেন। নর্থ ইস্ট স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার সোসাইটির সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যাংকার্সদের সভাতে ত্রিপুরার জন্য আলাদা চিন্তাভাবনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বর্তমান সরকার জনগণের সার্বিক কল্যাণে নিরন্তর কাজ করছে। মানুষের প্রয়োজনের কথা ভেবেই কাজ করা হচ্ছে। এখন ত্রিপুরায় লাখপতি দিদি অনেক রয়েছেন। প্রায় ৮৫ হাজারের অধিক লাখপতি দিদি এখন আমাদের রাজ্যে রয়েছেন। মানুষকে স্বাবলম্বী করার জন্য যা যা করার দরকার সেটা করা হচ্ছে। আগে স্ব সহায়ক দলের সংখ্যা ৪ থেকে ৫ হাজারের মতো ছিল। এখন প্রায় ৫৬ হাজার হয়ে গিয়েছে। কোটি কোটি টাকা রিভলভিং ফান্ড দেওয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে কাজ করছে রাজ্য সরকার। এই সরকার আসার পর প্রায় ১৩ হাজারের অধিক সরকারি চাকরি দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান করা হচ্ছে। আগে কি হতো? কেউ মিছিল মিটিংয়ে গেলে তবে চাকরি পাবে। কিন্তু এখন সেই সুবিধা নেই। গ্রুপ ডি চাকরির অফার খুব সহসাই দেওয়া হবে।

এদিন মান্দাই সফরকালে এই এলাকার জনজাতি সমাজপতিদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে তাঁদের বিভিন্ন মতামত সম্পর্কে অবগত হন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *