আগরতলা, ১১ ডিসেম্বর: সিপিআইএম সমর্থকরাই তিপরা মথার জামা গায়ে জড়িয়ে বিজেপিকে চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। বিলোনিয়ায় মহকুমা সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা তথা সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী শাসক জোট শরিক বিজেপি ও তিপরা মথার মধ্যে সম্পর্কে এভাবেই চির ধরানোর কৌশল নিয়েছেন।
তাঁর কথায়, জনজাতিদের অনেকেই মনে করেন সিপিআইএম সমর্থক হয়ে বিজেপির বিরোধিতা করা সম্ভব নয়। তাতে শাসক দোল বিজেপির রোষানলে পড়তে হবে। তাই তিপরা মথায় শামিল হয়ে বিজেপিকে আক্রমণ শানালে তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারবেন।
আজ সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র বলেন, বিগত তিন বছরে দলের যে সব অভিজ্ঞতা হয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে আগামী দিনের কার্যকলাপ পরিকল্পনা করতে হবে। আসন্ন সময়ে দলীয় কার্যগুলো আরো কৌশলগতভাবে সম্পাদন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, রাজ্য এবং দেশের কল্যাণমূলক কাজগুলো ছাড়া ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনগুলো শুধু পার্টির নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা বা তর্ক বিতর্ক ও বিশ্লেষণ করা নয়, বরং আমাদের এই বিশাল দেশের জনগণের সমস্যা সমাধানের পথ বের করা।
বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, দেশের কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মহিলা, পিছিয়ে পড়া জনগণ, সংখ্যালঘু জনগণের স্বার্থে কাজ করতে হবে। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও দেশের বহু জনগণের সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি। অন্যদিকে, শাসক দল টেলিভিশন, রেডিও ও ফ্ল্যাক্স পোস্টার ছাপানোর ক্ষেত্রে প্রচুর টাকা খরচ করছে। এই টাকা আসছে জনগণের পকেট থেকেই।
তিনি এই প্রসঙ্গে আরো বলেন, মানুষকে বোকা বানানোর জন্য শাসক দল গর্ব করে বলে যে তারা ৮২ লক্ষ জনগণকে বিনামূল্যে চাল দিচ্ছে। এদিকে দেশে চাল, ডাল বা গমের কোনো অভাব নেই। ১৪ রকমের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেশের জনগণ নিজেই উৎপাদন করছে। তাহলে কেনো মানুষকে এইভাবে খাওয়াতে হচ্ছে? এর আগেও তো সরকার ছিল, তাদের তো কখনো জনগণকে এভাবে খাওয়াতে হয়নি, কটাক্ষ করেন তিনি। তাঁর দাবি, সরকারকে চাল, ডাল বা গম ইত্যাদি ন্যায্য মূল্যে কৃষকদের থেকে ক্রয় করে উচিত মূল্যে রেশন শপের মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।
তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, এই দেশের শিল্পপতিরা সরকারকে ট্যাক্স দেয় না, শুধু লাভ করা ছাড়া তাদের আর কোনো মতলব নেই। কিন্তু বর্তমান এবং পূর্বতন সরকার প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকার মত তাঁদের কর মুকুব করেছে। অথচ সরকার কৃষকদের ক্ষেত্রে সেইরূপ কোনো ভূমিকা নিচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, জিরানীয়া এলাকায় সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নির্যাতন নিয়ে আরএসএস কিংবা বিজেপির কোনো সংগঠন কোনো মন্তব্য করেনি। তিনি মথা ও বিজেপির হাতে বঞ্চিত রাজ্যের জনগণকে সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।