আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর : হাড়হিম করা শীতের প্রভাবে জুবুথুবু হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবছর। কারণ, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ শীতের পরশে বাধা দেবে। অন্তত, আবহাওয়ার পূর্ভাবাসে এমনটাই আভাস মিলেছে।
সাধারণত, ঋতুকাল অনুযায়ী ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় শীতকাল হিসেবেই বিবেচনা করা হয়ে থাকে। শীত মরসুমে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে অনুমান করা হচ্ছে।
এই ঋতুতে দেশের বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকতে পারে। শুধুমাত্র দক্ষিণ উপদ্বীপীয় ভারতের বেশিরভাগ এলাকায় ব্যতিক্রমী আবহাওয়া পরিলক্ষিত হবে। সেখানে স্বাভাবিক থেকে স্বাভাবিকের নিচে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে। শীত মরসুমে দেশের উত্তর-পশ্চিম, মধ্য, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব অংশের বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের নিচে শৈত্যপ্রবাহের অনুভূতি মিলবে বলে প্রত্যাশা রয়েছে।
বিমান বন্দর স্থিত আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক পার্থ রায় জানিয়েছেন, এবছর শীতের মরসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠানামা করবে। তেমনি, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠানামা করবে। গতবছর শীতের মরসুমে তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করেছে। ফলে, এবছর শীতের মৃদু অনুভূতি মিলবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ডিসেম্বরে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে মাসিক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডিসেম্বরের মাসিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কিছু এলাকা ছাড়া দেশের বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হতে পারে। মধ্য ভারতে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক দিয়ে, ডিসেম্বরে দেশের উত্তর-পশ্চিম, মধ্য, পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব অংশে শৈত্যপ্রবাহের ঘটনা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
শ্রী রায়ের কথায়, ঘূর্ণিঝড় ফেঙ্গলের প্রভাবে আকাশ সাধারণত মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। তাই, শীতের প্রভাব কম দেখা দেবে। কারণ, সমুদ্রপৃষ্টে তাপমাত্রায় তারতম্য আবহাওয়ায় ভীষণ ভাবে প্রভাব ফেলে। তাঁর দাবি, ভারত মহাসাগরের সমুদ্রপৃষ্টের তাপমাত্রা ভারতের আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলে। এইমুহূর্তে সেখানে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রয়েছে।
তাতে স্পষ্ট, এবছর শীতকালে হিমেল হাওয়ায় মন জুড়াবে না। ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকা সকালে প্রাতঃভ্রমণের আমেজও তেমন মিলবে না। আবহাওয়ার এই নিষ্ঠুর পরিবর্তন নিঃসন্দেহে প্রকৃতির প্রতিশোধ বলেই ধরে নেওয়া ভুল হবে না। কারণ, এবছর বর্ষায় প্রকৃতির তান্ডব ত্রিপুরার মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন। তেমনি, শীতের মরসুমে কনকনে ঠান্ডার আমেজ মিলবে না বলেই আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অনুমান করা হচ্ছে।