আগরতলা, ২ ডিসেম্বর: ছাত্রীদের বিদ্যালয়মুখী করতে ও শিক্ষায় উৎসাহিত করতে রাজ্য সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। এই লক্ষ্যে রাজ্যের নবম শ্রেণির ছাত্রীদের বিনামূল্যে বাইসাইকেল দিচ্ছে। সরকারের এই উদ্যোগ নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী ক্ষমতায়ণে সহায়ক ভূমিকা নেবে। আজ খয়েরপুরের পল্লীমঙ্গল বিদ্যাজ্যোতি দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের মধ্যে রাজ্যভিত্তিক বাইসাইকেল বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা) মানিক সাহা একথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার নিয়েই নারী ক্ষমতায়ণের জন্য নানা প্রকল্প রূপায়ণ করে চলেছেন। ‘বেটি বাঁচাও-বেটি পড়াও’ এই কর্মসূচিতে তিনি দেশে নারী ক্ষমতায়ণ সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টা নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা আরও বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দেশের মহিলাদের বিকাশে বহুমুখী উদ্যোগের বাস্তব রূপায়ণের সাফল্যে বর্তমানে দেশের সাথে আমাদের রাজ্যের মহিলাদেরও আর্থসামাজিক মানের উন্নয়ন হয়েছে। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও কর্মসূচিও সার্থকতা পেয়েছে। লাখপতি দিদি তৈরীর মধ্য দিয়েও মহিলাদের আত্মনির্ভর করার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে। আজ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের রাজ্যের প্রতিটি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ২৩ হাজার ৩০০ জন ছাত্রীদের মধ্যে বাইসাইকেল বিরতণের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। শুধু বাইসাইকেল নয়, আগামী দিনে মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত ১০০ জন ছাত্রীকে স্কুটিও দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু গুণগত শিক্ষার প্রসারই নয়, বিদ্যালয়গুলির পরিকাঠামোগত উন্নয়নেও সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যে ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয় রয়েছে। এই বিদ্যাজ্যোতি বিদ্যালয়গুলির উন্নয়নেও সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। নিপুন মিশনে রাজ্যের ৮,৪০০ জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে বুনিয়াদি শিক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৪,২২৭টি প্রি-প্রাইমারি বিদ্যালয়ে নিপুন মিশনে নিপুন কর্ণার তৈরী করা হয়েছে। শিশুর মেধার বিকাশে সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির ভাষণে বিধায়ক রতন চক্রবর্তী বলেন, ছাত্রীদের জন্য বর্তমান সরকারের নানা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ণের ফলে রাজ্যে ড্রপ আউটের সংখ্যা এখন কমে গেছে। বাইসাইকেল পেয়ে দূর দূরান্তের ছাত্রীরাও বিদ্যালয়মুখী হচ্ছে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পুরাতন আগরতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান ঝর্ণারাণী দাস ও আগরতলা পুরনিগমের কর্পোরেটর উত্তম ঘোষ। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার জানান, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ২৩ হাজার ৩০০ জন নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে এই বাইসাইকেল দেওয়া হচ্ছে। এতে ব্যয় হচ্ছে ১০ কোটি ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭০০ টাকা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন সি শর্মা। উপস্থিত ছিলেন পল্লীমঙ্গল দ্বাদশ শ্রেণী (বিদ্যাজ্যোতি) বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুশান্ত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা সহ অন্যান্য অতিথিগণ ছাত্রীদের হাতে বাইসাইকেলগুলি তুলে দেন।