আগরতলা, ৩০ নভেম্বর: শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচিগুলির বাস্তবায়নে চিকিৎসকরা সামাজিক দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসবেন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভালোভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা নেবেন এই প্রত্যাশা তাদের কাছে সবার। আজ আগরতলার আইএমএ হাউজে ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স ত্রিপুরা রাজ্য শাখার ৩০তম বার্ষিক রাজ্য সম্মেলন এর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন।
এবারের সম্মেলনের থিম হচ্ছে শিশু চিকিৎসায় বর্তমান অগ্রগতি ও বাধা। অনুষ্ঠানে ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স ত্রিপুরা রাজ্য শাখার পক্ষ থেকে রাজ্যের বরিষ্ট চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ আলেখ্য দাশগুপ্তকে লাইফটাইম অ্যাচিভম্যান্ট অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের এমবিবিএস পরীক্ষায় পেডিয়াট্রিকস বিভাগে সর্বোচ্চ নম্বরের অধিকারী ডা. হিমানি দেবনাথকে সম্মাননা জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাদের হাতে সম্মাননা স্বরূপ উপহার তুলে দেন। এদিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলন উপলক্ষে একটি স্মরনিকারও আবরণ উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত। শিশুদের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং স্বাস্থ্যকর সমাজ গঠনে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার উন্নতিতে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সবসময় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শিশুদের শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক বুদ্ধির বিকাশে শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ভুমিকা অনস্বিকার্য।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই সম্মেলনে অনেক নতুন নতুন বিষয় আলোচনায় আসবে যা আগামীদিনে শিশুদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স ত্রিপুরা রাজ্য শাখার উদ্যোগে গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির কথাও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের সুস্থ এবং সবলভাবে গড়ে তুলতে রাজ্যের ১২৫টি বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাজ্যভিত্তিক স্কুল হেলথ মিশনের সূচনার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মূলত ৬টি স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে এই কর্মসূচিটি কাজ করবে। স্কুলের ভেতরে স্বাস্থ্যসম্মত বিষয়গুলি সম্পর্কে শিশুদের অবগত করে স্কুলে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তোলাই হচ্ছে এই কর্মসূচির মুখ্য উদ্দেশ্য। শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় রাজ্যে চালু মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব, সুস্থ কৈশর অভিযান, পোষণ কর্মসূচি, রাষ্ট্রীয় বাল স্বাস্থ্য কার্যক্রম, অ্যানিমিয়া মুক্ত ভারত কর্মসূচি, ত্রিপুরা কিশোরী সুচিতা অভিযান ইত্যাদি প্রকল্পও কর্মসূচিসমূহের কথাও মুখ্যমন্ত্রী বিশদভাবে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা প্রফেসর ডা. সঞ্জীব কুমার দেববর্মা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অর্গানাইজিং চেয়ারপার্সন ডা মৃণাল দাস। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স ত্রিপুরা রাজ্য শাখার সভাপতি ডা. শ্রীবাস দাস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব রাজীব দত্ত, সেন্ট্রাল ইন্ডিয়ান একাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স-এর এক্সিকিউটিভ বোর্ড মেম্বার ডা. জয়ন্ত কুমার পোদ্দার।