BRAKING NEWS

ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যের ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ২১ নভেম্বর : ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কারণ গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন না হলে দেশের সার্বিক উন্নয়নও সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস, সবকা প্রয়াস দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করছে রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার এডি নগরের পঞ্চায়েতিরাজ ট্রেনিং ইন্সটিটিউটে আয়োজিত পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনে ‘পিপলস প্ল্যান ক্যাম্পেইন ২০২৪’ এর রাজ্যস্তরের কর্মশালার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, প্রতি বছরই এধরণের কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এবছরও ২রা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিনে এই বিশেষ ক্যাম্পেইনের সূচনা করা হয়েছিল। এটা চলবে ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত। এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা তৈরি করা। এক্ষেত্রে জেলা সভাধিপতি থেকে শুরু করে গ্রামস্তরের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে পঞ্চায়েত স্তরে কাজ জোরদার করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। নো পোভারটি, জিরো হাঙ্গার, গুড হেল্থ, জেন্ডার ইকুইলিটি, ক্লিয়ার ওয়াটার এন্ড স্যানিটাইজেশন, এফোর্ডেবল এন্ড গ্রীন এনার্জি ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চায়েত রাজ মন্ত্রক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরনের লক্ষ্যে কাজ করছে। জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্ন ছিল গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন হলেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই দিশায় কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলছেন গ্রামের উদয় হলে ভারত উদয় হবে। ভারত এখন রূপান্তরের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই গ্রামের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলছেন প্রধানমন্ত্রী। ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্যে এখন ই অফিস হয়েছে। যেখানে ক্যাবিনেট থেকে শুরু করে গ্রাম স্তর পর্যন্ত ই অফিস হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনেও এই বিষয়টি আমি গর্বের সঙ্গে বলেছি। যেখানে সবাই হাততালি দিয়ে আমাদের সম্মানিত করেছেন। যা খুবই গর্বের বিষয়।  

এদিন মুখ্যমন্ত্রী জনপ্রতিনিধিদেরও কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পগুলি নিয়ে বিস্তৃত ধারণা রাখার পরামর্শ দেন যাতে কাজ করার জন্য সহায়ক হয়। বিগত বছরগুলিতে পঞ্চায়েত স্তরে বেশ ভালো কাজ হয়েছে। আগামীতে এর চাইতেও আরো ভালো করতে হবে। 

কর্মশালায় মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, রাজ্যের ৫টি পঞ্চায়েত রাজ প্রতিষ্ঠান শুধু মহিলা দ্বারা পরিচালিত। আর এই বিষয়টি ফটো সহকারে প্রধানমন্ত্রীর গোচরে নিয়েছেন তিনি। কাজ করার সময়ে সততা ও স্বচ্ছতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। বিশেষ করে পঞ্চায়েত স্তরে। এবারও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে আমাদের সরকার গঠিত হয়েছে। স্বচ্ছতা না থাকলে শুধু পেশীর জোর কিংবা অর্থবল দিয়ে বেশিদিন থাকা যায় না। স্বচ্ছতা থাকলে এবং মানুষের সঙ্গে ব্যবহার ভালো থাকলে বারবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতে আমাদের জয় আসবে ও মানুষ বিশ্বাস করবে। আর এই কাজটা আমাদের অবশ্যই করতে হবে। আগামীদিনে উন্নয়নের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা করলে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা ও এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলা সম্ভব হবে। এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি আগামীদিনে স্টেট পঞ্চায়েত রাজ রিসোর্স সেন্টার হিসেবে কাজ করবে। 

এদিন কর্মশালায় বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি বলাই গোস্বামী, উত্তর ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি অপর্ণা নাথ, উনকোটি জিলা সভাধিপতি অমলেন্দু দাস, ধলাই জিলা সভাধিপতি সুস্মিতা দাস, খোয়াই জিলা সভাধিপতি অপর্ণা সিংহ রায় দত্ত, সিপাহীজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, পঞ্চায়েত দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ রাঠোর, অধিকর্তা প্রসূন দে সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক আধিকারিকগণ। 

এই কর্মশালায় পঞ্চায়েত উন্নয়ন সূচকে (পিডিআই) দৃষ্টান্তমূলক অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েতকে পুরস্কৃত করেন মুখ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *