আগরতলা, ১৬ নভেম্বর: পরিবেশ বান্ধব এবং সাশ্রয়ী বৈদ্যুতিক চুলা অতি দ্রুত রান্না করতে সক্ষম এবং এতে অগ্নিসংযোগের কোন ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই। আজ আগরতলায় প্রজ্ঞা ভবনে ন্যাশনাল এফিশিয়েন্ট কুকিং প্রোগ্রামের সূচনা অনুষ্ঠানে একথা বলেন
বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এদিন মন্ত্রী রাজ্যের ১০০ টি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে ইলেকট্রিক্যাল কুক টপ তুলে দিয়েছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ।
এদিন বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন, এই পর্যায়ে মোট ২ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে এই কুক টপ অর্থাৎ বৈদ্যুতিক চুলা দেয়া হবে, ধাপে ধাপে রাজ্যের ১০ হাজার ২২৩ টি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারেই দেওয়া হবে। মন্ত্রী আরো জানান, অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারকে এই এনার্জি এফিশিয়েন্সি কার্যক্রমের মধ্যে সংযুক্ত করা ভারতবর্ষের মধ্যে ত্রিপুরাতেই প্রথম। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগ হিসেবে এবং পরিবেশবান্ধব হিসেবে ভারত সরকারের শক্তি এই উদ্যোগ নিয়েছে।
তাঁড কথায়, ইতিমধ্যেই রাজ্যের ১০০ টি বিদ্যালয়কে ত্রিপুরা রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের সহযোগিতায় বিইই এই কার্যক্রমের আওতায় এনে কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। রাজ্যের চারটি জেলা হাসপাতালকে এনার্জি এফিসিয়েন্ট কার্যক্রমের আওতায় এনে ইতিমধ্যেই বৈদ্যুতিক লাইট, ফ্যান সহ অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
এদিন বিদ্যুৎ মন্ত্রী “পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা” এর সুবিধা নিয়ে জনগণের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছেন। সমস্ত সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত পরিসরে এই যোজনা বিদ্যুৎ বিলকে একেবারে আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসতে পারবে বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন। এই বিদ্যুৎ অত্যন্ত সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য বলেও তিনি জানান। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যুৎ মন্ত্রী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে এই কুক টপ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্য নিগম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিশ্বজিৎ বসু, ফিনান্স ডিরেক্টর সর্বজিত সিং ডোগরা , জেনারেল ম্যানেজার স্বপন দেববর্মা, ইইএসএল এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বিশাল কাপুর, চিফ জেনারেল ম্যানেজার অনিমেষ মিত্র , ডিজিএম নীতিন ভাট এবং সমাজকল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন দাস সমেত অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য,ন্যাশনাল এফিশিয়েন্ট কুকিং প্রোগ্রাম জাতীয় পর্যায়ে এই কর্মসূচির সূচনা হয় ২০২৩ সালের ২রা নভেম্বর। কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ এবং পুনঃ নবীকরণ শক্তি উন্নয়ন মন্ত্রী এই কর্মসূচির সূচনা করেন। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হলো দূষণমুক্ত, সম্পূর্ণ পরিচ্ছন্ন নিরাপদ এবং দ্রুত রান্নার বিষয়টি নিশ্চিত করা। ভারত সরকারের শক্তি মন্ত্রকের এটি একটি বিদ্যুৎমুখী অর্থাৎ গো ইলেক্ট্রিক উদ্যোগ। বিদ্যুৎভিত্তিক ইন্ডাকশন রান্নার চুলো ব্যবহার জনপ্রিয় করে তোলাই এর উদ্দেশ্য। এই চুল্লা প্রথাগত পদ্ধতির চেয়ে দ্রুত গরম হয়ে যায় এবং দ্রুত ঠান্ডাও হয়। যা রান্নার কাজে যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই চুলা ব্যবহারে আগুন লেগে যাওয়ার কোন ভয় থাকেনা। কারণ এখানে বার্নারের কোন প্রয়োজন নেই ।এই চুলা ব্যবহার যেকোনো জায়গাতেই করা যেতে পারে। তা স্থানান্তরযোগ্য এবং ব্যবহারিক পদ্ধতিও অত্যন্ত সহজতর। ন্যাশনাল ইফিসিয়েন্ট কুকিং প্রোগ্রাম এর অঙ্গ হিসেবে গোটা দেশে মোট ২০ লক্ষ বিদ্যুতিক চুল্লা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা শক্তি দক্ষ এবং টেকসই দেশ গঠনের জন্য ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ।