BRAKING NEWS

রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি, সাম্প্রদায়িক অশান্তি সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ: বিরোধী দলনেতা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ অক্টোবর: ঘুরে দাঁড়ানোর প্রশ্নের নয়া দিশা নির্ধারণে ত্রিপুরায় সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে শুক্রবার। বেশ কয়েক মাস অন্তর অন্তর রাজ্য কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় সিপিএমের। এরই অঙ্গ হিসেবে শুক্রবার আগরতলার মেলার মাঠে সিপিএম রাজ্য কার্যালয়ে এক দিবসীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এই বৈঠকে আগামী দিনের রণকৌশল এবং রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

বৈঠক শেষে বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠকে আলোচিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বলেন, এ দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠকে বর্তমান সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয়ের মধ্যে উত্তর জেলার কদমতলায় বর্তমান নিয়ে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক অশান্তির কথা তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন কদমতলা, পানিসাগর এবং ঊনকোটি জেলায় এই সাম্প্রদায়িক অশান্তি প্রমাণ করে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা।

এছাড়াও বন্যা পরিস্থিতিতে রাজ্যের সার্বিক দিক বিবেচনা করে বিরোধী দলনেতা বলেন বন্যাকালীন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের প্রতি বিজেপি সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। যাদের জমির সর্বস্ব ভেসে গেছে তাদের জন্য সামান্য অর্থের ব্যবস্থা করেনি সরকার, এমনই অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতিতে যে সরকার সাধারণ মানুষের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে ব্যর্থ সেই সরকার রাজ্যের এডুকেশন হাব, স্বাস্থ্য হাব নির্মাণের কথা বলছে। বন্যা কালীন পরিস্থিতিতে কৃষকের সমস্ত ফসল বন্যার জলে ভেসে গেছে। কিন্তু তাদেরকে ন্যূনতম সাহায্য করেনি বিজেপি সরকার।

তিনি আরো বলেন, রাজ্য বিদ্যালয়গুলির বেহাল অবস্থা। সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকা নেই। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে একাধিক বিদ্যালয়। অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি করাচ্ছেন। সরকারি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার এডুকেশন হাব বানানোর চিন্তা করছেন। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও একই দশা বলে অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা। তার কথায় বহিরাজ্য থেকে নামিদামি চিকিৎসক এনে বিভিন্ন জটিল অস্ত্রপচার সংঘটিত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে এই সুযোগ-সুবিধা গুলি সাধারণ মানুষের কতটুকু হাতের নাগালে থাকবে সেটাই প্রশ্ন।

এদিকে বেকারদের কর্মসংস্থান সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, স্বাস্থ্য হাব, শিক্ষা হাব বানানোর কথা বললেও রাজ্যে সরকারি কোন ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে না। নতুন করে লোক নিয়োগ না করেই একের পর এক উন্নয়নের কথা শোনাচ্ছে সরকার। এদিকে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়োগ সরব হন বিরোধী দলনেতা। অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কোন ধরনের নিয়োগ করা হচ্ছে না। ইউজিসি গাইডলাইন না মেনে একাংশ স্বার্থান্বেষীদের সমৃদ্ধ করতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। যার বিরোধীতা করেন তিনি।

পাশাপাশি এদিনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বামেদের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামে এগিয়ে এসে লড়াই আরো তেজী করার আহ্বান করে বিরোধী দলনেতা। এদিনের বৈঠক থেকে আগামী ২৬ শে নভেম্বর গোটা দেশের সাথে রাজ্যেও এক আন্দোলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে। এছাড়াও এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত থেকে বামফ্রন্ট আহ্বায়ক নারায়ণ কর বলেন, কেন্দ্রের এনডিও সরকার গোটা দেশব্যাপী এক দেশ এক ভোট এই নীতি চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে গোটা দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *