BRAKING NEWS

ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ৭% হবে, পূর্বাভাস বিশ্ব ব্যাঙ্কের

নয়াদিল্লি, ০৪ সেপ্টেম্বর : ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ভারতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৭ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার মতে, এই সময়ে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাঝারি মেয়াদে শক্তিশালী থাকবে, যা বেসরকারী ভোগ এবং বিনিয়োগের মতো মূল কারণগুলির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

একইভাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকেও এমন আশা পোষণ করা হয়েছে, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ভারতের মোট আভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২০টি মৌলিক পয়েন্টের উপর ভিত্তি করে পরিমার্জিত হিসেবে তা ৭ শতাংশ-এ পৌঁছতে পারে।

পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রকের ত্রৈমাসিক অনুমান থেকে জানা গেছে যে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশে অনুমান করা হয়েছিল৷ মূলত ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের জন্য আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ায় সরকারি ব্যয় হ্রাসের কারণে এমনটা হয়েছিল।

এদিকে, বিশ্ব ব্যাঙ্কের পর্যবেক্ষণ হলো যে, ভারত সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি হিসাবে বিদ্যমান থাকছে ৷ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা দ্রুত ৮.২ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সরকারি পরিকাঠামো বিনিয়োগ এবং রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের উত্থানের ফলে এই প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছিল। সরবরাহ পরিষেবা ক্ষেত্র দারুন মদত পেয়েছিলি ম্যানুফেকচারিং শিল্পে বিপুল প্রবৃদ্ধির কারণে  কেননা, ম্যানুফেকচারিং শিল্প  ৯.৯ শতাংশ বৃদ্ধি করছিলো। তেমনি যে কোনো পরিস্থিতিতে মানানসই পরিষেবা ক্ষেত্রেও উত্থান লক্ষ্য করা মতো। ফলে, কৃষিতে নিম্ন আয়ের ঘাটতি পূরণ করে সম্ভব হয় ৷

এই প্রবণতা থেকে প্রমাণিত হয় যে, মহামারীর পর থেকে শহুরে বেকারত্বের হার ধীরে ধীরে উন্নতি হয়েছে, বিশেষত মহিলা শ্রমিকদের জন্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গোড়ার দিকে শহরাঞ্চলে মহিলাদের মধ্যে বেকারত্ব ৮.৫ শতাংশ পরে যায়, যদিও শহুরে যুবদের মধ্যে বেকারত্ব ১৭ শতাংশে বৃদ্ধি পায়।

চ্যালেঞ্জিং বাহ্যিক অবস্থার মধ্যে, বিশ্বব্যাংক আশা করছে যে ভারতের মধ্যমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক থাকবে। ২০২৪/২৫ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশে পৌঁছাবে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছর এবং ২৬-২৭ অর্থবছরে শক্তিশালী বৃদ্ধি বহাল থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শক্তিশালী রাজস্ব প্রবৃদ্ধি এবং আরও রাজস্ব একীকরণের সাথে, ঋণ-থেকে-জিডিপির অনুপাত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এর ৮৩.৯ শতাংশ থেকে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৮২ শতাংশে নেমে আসবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি ২০২৬/২৭ অর্থবর্ষ পর্যন্ত জিডিপির ১-১.৬ শতাংশে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এতে প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও তুলে ধরা হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য আড়াআড়ি বেড়ে উঠা সংরক্ষণবাদী আর্থিক গতিও প্রত্যক্ষ করেছে। মহামারী পরবর্তী সময়ে বিশ্বব্যাপী ভ্যালু চেইনের পুনর্গঠন ভারতের জন্য সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে।

ভারতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর অগাস্ট তানো কৌমে বলেন, ‘মুদ্রাস্ফীতি হ্রাসের পাশাপাশি ভারতের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা চরম দারিদ্র্য কমাতে সহায়তা করবে। ভারত তার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তার প্রবৃদ্ধি আরও বাড়াতে পারে। আইটি, ব্যবসায়িক পরিষেবা এবং ফার্মা শিল্পে তার শ্রেষ্ঠত্ব তো রয়েছেই, তার বাইরে গিয়ে ভারত টেক্সটাইল, পোশাক এবং জুতো ও চর্ম শিল্পের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স এবং সবুজ প্রযুক্তি পণ্যের রফতানি বাড়িয়ে রফতানি ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য আনতে পারে।

ব্যাংকের প্রতিবেদনের সহ-লেখক বরিষ্ট অর্থনীতিবিদ নোরা দিহেল ও রান লি বলেন, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়ায় বিশ্বস্তরে পোশাক রফতানিতে ভারতের অংশ ২০১৮ সালের ৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৩ শতাংশে নেমে এসেছে। বাণিজ্য সম্পর্কিত আরও কর্মসংস্থান তৈরি করতে ভারত গ্লোবাল ভ্যালু চেইনে আরও গভীরভাবে নিজেদের অবস্থানকে আরো সংহত করার দিকে ঝুঁকতে পারে যা উদ্ভাবন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সুযোগও তৈরি করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *