ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির পেছনে রাজনৈতিক দলই দায়ী : প্রদ্যোত

আগরতলা, ৩১ আগস্ট: ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক অশান্তির পেছনে রাজনৈতিক দলই দায়ী থাকে। গন্ডাছড়া, রানীরবাজার সহ সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় কোনো এক রাজনৈতিক দলের হাত রয়েছে। আজ ইন্দ্রনগর এলাকার নিহত চিরঞ্জিৎ দে-র বাসভবনে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। পাশাপাশি, নিহতের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে ধরেন। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরায় অবৈধভাবে বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রবেশ কোনোভাবে কাম্য নয়।তাতে আগামী দিনে ভারতের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষতি হতে পারে।

এদিন তিনি বলেন, ত্রিপুরায় টানা বৃষ্টিপাতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় ত্রিপুরার ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে ত্রিপুরাবাসীকে একত্র হতে হবে। তাই জাতপাতের উর্ধ্বে গিয়ে বন্যায় নিহতদের পরিবারে সদস্যদের ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য প্রদান করছেন তিনি। আর্থিক সহায়তা প্রদান করে নিতহদের পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকার কর্তব্য পালন করেছেন তিনি বলে দাবি করেন। 

তাঁর কথায়, নিহতদের পরিবারে সদস্যদের আর্থিক প্রদান করা এটা আমার মানবিক দায়িত্ব। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই অর্থ সাহায্য আমি করেছি। এখন রাজনীতি করার সময় নয়। বন্যা নিয়ে রাজনীতি করা বিধানসভায় বিরোধীরা প্রশ্ন করবেন। আপাতত রাজনীতি করার দরকার নেই।

ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণ ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে শ্রী দেববর্মণ বলেন, তিনি আগরতলায় আছেন। আগামীকাল শান্তিরবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। ইতিমধ্যে তিনি বন্যায় মোকাবিলা করতে ১ কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছেন। 

এদিন তিনি রাণীরবাজারের কালী মূর্তি ভাঙার পরিবর্তী হিংসার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কালী মূর্তি ভাঙা একবারের ঠিক হয় নি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে হামলা করা তা অত্যন্ত দুঃখজনক। অতিসত্বর ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, সবসয়ম সাম্প্রদায়িক হিংসার পেছনে রাজনৈতিক দল দায়ী থাকে। সেটা বিজেপি,কংগ্রেস বা সিপিএম ওই হোক না কেন। সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া গন্ডাছড়ার ঘটনা, রানীরবাজার সহ আরও সাম্প্রদায়িক হিংসার পেছনে কোনো এক রাজনৈতিক দলের হাত থাকে।  

এদিন তিনি আরও বলেন, ত্রিপুরায় সাম্প্রদায়িক হিংসা কোনোভাবে কাম্য নয়। কারণ, ত্রিপুরা এখন ধীরে ধীরে উন্নয়নের এগিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, রাজ্যে জাতি জনজাতি ও সংখ্যালঘুরা একত্রে বসবাস করছে। বহু বছর ধরে ত্রিপুরায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছে তাঁরা। একে অপরের সাথে লড়াই করা উচিত নয়। 

এদিন তিন বলেন, ত্রিপুরায় অবৈধভাবে বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রবেশ কোনোভাবে কাম্য নয়। বাংলাদেশের খাদ্য, স্বাস্থ্য সহ একাধিক সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু ত্রিপুরায় প্রবেশ মেনে নেওয়া উচিত নয়। সাম্প্রতিক দিনগুলিতে অনুপ্রবেশ মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাতে আগামী দিনে ভারতের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের ক্ষতি হতে পারে। তাই  অনুপ্রবেশ রোধে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *