আগরতলা, ২৩ আগস্ট: ত্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা যাবে না। অত্যাবশকীয় সামগ্রীর কালোবাজারী হলেই কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেবে খাদ্য দপ্তর।আজ সচিবালয়ের সাংবাদিক সম্মেলনে কালোবাজারিদের উদ্দেশ্যে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই বললেন খাদ্যমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। সাথে তিনি যোগ করেন, কালোবাজারী রুখতে প্রশাসনের তরফ থেকে মাইকিং করা হবে।নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার।
এদিন তিনি বলেন, রাজ্যে বিদ্যমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য সহ পেট্রোপণ্য, এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে সে বিষয়ে খাদ্য দপ্তর আগাম উদ্যোগ নিয়েছে৷ এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নিত্য সামগ্রী জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি করার প্রয়াস করবেন।
তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় যথেষ্ট পরিমান খাদ্যসামগ্রী মজুত রয়েছে। নায্য মূল্যের দোকান থেকে শুরু করে খোলা বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণের খাদ্য সামগ্রী মজুত রয়েছে। রাজ্যে কোনো ধরণের মূল্যবৃদ্ধির কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।তাঁর কথায়, রাজ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের কোন সংকট নেই। অযথা বিভ্রান্ত হবার কোন কারণ নেই। আগামী ৯ দিনের জ্বালানী মজুত রয়েছে।
তিনি কালোবাজারি ব্যবসায়ীদের প্রতি হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, তারা সাধারণ মানুষের সাথে কোনরকম সমস্যার সৃষ্টি না করেন এবং সাধারণ মানুষরা যেন হয়রানির শিকার না হয়। খাদ্যমন্ত্রী এদিন কালোবাজারি ও মজুদদারদের প্রতি তীব্র হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন কোথাও কোনরূপ কৃত্রিম সংকট তৈরি করা যাবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যাঁরাই যুক্ত থাকবেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে খাদ্য দপ্তর।
তিনি আরও বলেন, রাজ্যে মজুদদাররা যাতে কোনভাবেই কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে না পারে সেজন্য রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকেরা তল্লাশি অভিযান ও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। বন্যা পরিস্থিতিতে ও তার পরবর্তী সময়ে কোনও ব্যবসায়ী বেশি দামে জিনিস বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে জরিমানা ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কড়া বার্তা দিলেন তিনি।সাংবাদিক সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে বর্তমানে গণবণ্টন ব্যবস্থায় ও খোলা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। গণবণ্টন ব্যবস্থায় রাজ্যে বর্তমানে চাল ৭৬ দিনের, আটা ৯৯ দিনের, লবণ ৩১ দিনের, মশুর ডাল ১৬ দিনের এবং চিনি ৫ দিনের মজুত রয়েছে। এছাড়াও খোলা বাজারে চাল ২৭ দিনের, ডাল ১১ দিনের, ভোজ্য তেল ৮৩ দিনের, আলু ৭ দিনের, পেঁয়াজ ৫ দিনের, আটা ৪২ দিনের, চিনি ২৫ দিনের এবং লবণ ৩৮ দিনের মজুত রয়েছে।
এদিন তিনি আরও বলেন, বিমানের মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের জন্য প্রায় ২০ হাজার প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী প্রদান করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ইতিমধ্যে ৩১৪০ প্যাকেট খাবার প্রদান করা হয়েছে বন্যা কবলিত এলাকায়।

