আগরতলা, ৩ আগস্ট: ত্রিপুরায় টানা দুইদিনের বৃষ্টিপাতে রাজ্যের একাধিক জায়গায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু হতাহতের কোনো খবর নেই। রাজ্য জুড়ে ১টি বাড়ি সম্পূর্ণ, ৩৭টি বাড়ি মারাত্মকভাবে এবং ৮২টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ক্ষতিপূরণের সমীক্ষা করা হচ্ছে। রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের রিপোর্টে এমনটাই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের রিপোর্টে জানা গেছে, ভারী বর্ষণে পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা, উনকৌটি এবং সিপাহীজলা জেলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় নি। কিন্তু, ধলাই জেলার অধীন লংতরাই ভ্যালি এবং গন্ডা তুইসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই জায়গায় ২১টি বাড়ি মারাত্মকভাবে এবং ৪৯টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমনি, খোয়াই জেলায় একটি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রিপোর্টে আরো জানা গিয়েছে, টানা দুইদিনের বৃষ্টিতে গোমতী জেলার করবুক এবং অমরপুরে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকালের বৃষ্টিতে করবুকের মহাদেব পাড়ায় পাহাড়ে ধস পড়ে বন্ধ যান চলাচল। ওই সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাথে সাথে প্রশাসনের তরফ থেকে এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে নতুন ধনসার্দার পারা জে বি স্কুল এবং চেল্লাকাহাম বিদ্যালয়ে শরনার্থী শিবিরের পৌঁছানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত নতুন ধনসার্দার পারা জে বি বিদ্যালয়ে মোট ১০টি পরিবারের ২৮ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৮ জন, মহিলা ১১ জন এবং শিশু ৯ জন রয়েছে। তেমনি, চেল্লাকাহাম বিদ্যালয়ে শরনার্থী শিবিরের মোট ৫টি পরিবারের ২৪ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৯ জন, মহিলা ১২ জন এবং শিশু ৩ জন রয়েছে। তাছাড়া, ইতিমধ্যে ধস পড়া রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে। তেমনি, অমরপুরে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাথে সাথে প্রশাসনের তরফ থেকে এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে ঢাকাইয়া পারা এবং বীরগঞ্জ উত্তর পারা হেলথ সাব সেন্টারে শরনার্থী শিবিরের পৌঁছানো হয়েছে। এর মধ্যে বীরগঞ্জ উত্তর পারা হেলথ সাব সেন্টারে শরনার্থী শিবির বন্ধ করা হয়েছে। শুধু মাত্র ঢাকাইয়া পারা শিবিরে মোট ১১টি পরিবারের ৫৯ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ২২ জন, মহিলা ২৪ জন এবং শিশু ১৩ জন রয়েছে। তাছাড়া, ১৬টি মারাত্মকভাবে এবং ৭টি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রিপোর্টে আরো জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিলোনিয়া মহকুমা, সাব্রুম এবং শান্তিরবাজারে রাস্তায় বড় ধ্বস পরে।প্রচন্ড বৃষ্টির জেরে গাছ রাস্তায় পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ওই সব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাথে সাথে প্রশাসনের তরফ থেকে এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে আমজাদনগর বিদ্যালয় এবং রামচন্দ্র রিয়াং পারা এসবি স্কুল শরনার্থী শিবিরের পৌঁছানো হয়েছে। এখনো পর্যন্ত রামচন্দ্র রিয়াং পারা এসবি স্কুল শিবিরে মোট ৬টি পরিবারের ১৭ টি জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৭ জন, মহিলা ৯ জন এবং শিশু ১ জন রয়েছে। তেমনি, আমজাদনগর বিদ্যালয়ে শরনার্থী শিবিরের মোট ১৮টি পরিবারের ১১৯ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ৫৩ জন, মহিলা ৫২ জন এবং শিশু ১৪ জন রয়েছে। তেমনি, সাব্রুমে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সাথে সাথে প্রশাসনের তরফ থেকে এলাকাবাসীদের উদ্ধার করে বৈষ্ণবপুর মাল্টিপারপাস হলে এবং বৈষ্ণবপুর বিদ্যালয়ে শরনার্থী শিবিরের পৌঁছানো হয়েছে। এর মধ্যে বৈষ্ণবপুর মাল্টিপারপাস হলে শিবিরে মোট ১৪টি পরিবারের ৫৫ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ২৩ জন, মহিলা ৩২ জন রয়েছে। তেমনি, বৈষ্ণবপুর বিদ্যালয়ে শরনার্থী শিবিরের মোট ১৩টি পরিবারের ৪৪ জন সদ্যস রয়েছেন। যার মধ্যে পুরুষ ২০ জন, মহিলা ২৪ জন রয়েছে। তাছাড়া, বিলোনিয়ায় ২২টি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।