নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ৩০ জুলাই: গৃহবধূ কাজলি দেবের অস্বাভাবিক মৃত্যু ,নাকি আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখতে কাজলী দেবের বাড়িতে গেলেন মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল। বিয়ের মাত্র নয় মাসের মধ্যে কাজলী দেবের মৃত্যু অনেকেই মেনে নিতে পারেননি। যদিও কাজলি দেবের স্বামীর পরিবার অর্থাৎ নয়াপাড়া ইংলিশ মিডিয়াম বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্ব দেবের পরিবার কাজলির মৃত্যুকে নেহাত একটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু কাজলী দেবের পরিবার কোনভাবেই তা মানতে নারাজ।
মাত্র নয় মাসের মাথায় শ্বশুরের কথা শুনে আত্মঘাতী হবে কাজলি দেব তা হতে পারে না। তাই অনেকের মতে কাজলী দেবকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং তার প্রকৃত বিচার হওয়া একান্ত দরকার। প্রথমে শ্বশুরবাড়ির দেবর বিপ্র দাস গ্রেপ্তার হয় এবং পরবর্তী সময় ধর্মনগর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে স্বামী বিশ্ব দাস পুলিশের জালে গ্রেপ্তার হয়।
মঙ্গলবার ত্রিপুরা মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে রত্না কর দেবনাথ সহ এক প্রতিনিধি দল কাজলী দেবের বাড়িতে যায় এবং কাজলের মার কাছ থেকে সম্পূর্ণ ঘটনা শুনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদানের আশ্বাস দিয়ে যান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন মৌসুমী পাল, টি সি এফডব্লিউ এর কাউন্সিলর এবং উত্তর জেলা মহিলা মোর্চার সভানেত্রী রূপালী অধিকারী।
প্রতিনিধিদল কাজলি দেবের বাড়িতে গিয়ে সার্বিক ঘটনার খবর নেন এবং প্রকৃত দোষীকে সাব্যস্ত করে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি প্রদানের প্রতিশ্রুতি গিয়ে যান। মহিলা কমিশন কাজলি দেবের মৃত্যুকে নিছক একটা আত্মহত্যা জনিত মৃত্যু মানতে নারাজ। তাই পুলিশ প্রশাসনের দারস্ত হয়ে কাজলি দেবের প্রকৃত বিচার এবং তার মৃত্যুর জন্য যা কিছু দায়ী সাভ্যন্ত করে শাস্তি প্রদানের জন্য কাজ করবেন বলে আশ্বাস দেন। বর্তমানে যৌবনে পা দেওয়া কাজলী দেবের মৃত্যুকে কেউই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না।
কাজলের মা জানান যে মেয়েকে কোনদিন একটা আঘাত পর্যন্ত করেননি সেই মেয়ে কিভাবে তার স্বামীর ঘরে শুধু একটা পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল তা তার ঘর এবং তার শ্বশুরবাড়ি সহ জীবনকে নিঃস্ব করে দিল। এই ঘটনার একটি প্রকৃত বিচার হওয়া একান্ত প্রয়োজন। না হলে ঘরে ঘরে কাজলীর মতো নিরাপরাধ মেয়েরা দিনের পর দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে এবং সামাজিক অবক্ষয় অব্যাহত থাকবে। তাই সামাজিক অবক্ষয় রুখতে এবং কাজলীর মত মেয়েদের জীবন বাঁচাতে কাজলের মৃত্যুর জন্য দায়ী কে বা কারা তাদের সঠিক শাস্তি প্রদান করা হোক।

